৩ দিনে ৮০৬ টন কাঁচা মরিচ আমদানির পরও কমেনি দাম, যশোরে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত তিনদিনে ৮০৬ টন কাঁচা মরিচ আমদানি সত্ত্বেও পণ্যটির দাম কমেনি। জেলার বিভিন্ন খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুর্গাপূজার কারণে টানা পাঁচদিন বন্দর বন্ধ থাকার কারণে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের।
আজ বুধবার স্থানীয় বাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকা কেজিতে। কিন্তু, আজ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪০০ টাকা কেজি দরে।
বেনাপোল চেকপোস্ট বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা জামাল হোসেন বলেন, 'এক সপ্তাহ আগেও মরিচ কিনেছিলাম ৯০ টাকা কেজি। আজ দেখছি ৩৫০ টাকা কেজি। এভাবে চললে আমরা চলব কী করে?'
কাঁচা মরিচ কিনতে আসা রফিকুল আলম বলেন, আমরা বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার বাসিন্দা। শুনছি এবং দেখছি, এ বন্দরে প্রচুর কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে। সে হিসেবে তো ১০০ টাকার নিচে দাম হওয়া দরকার। অথচ এখনও আমাদের ৩৫০-৪০০ টাকা কেজির ওপরে কাঁচা মরিচ কিনতে হচ্ছে।'
যশোর শহরের বড় বাজারে সবজি বিক্রেতা শংকর কুমার জানান, প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে দেশি মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আর পূজার ছুটির কারণে বন্দর কয়েকদিন বন্ধ থাকায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে বুধবার বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমদানি বাড়লেও আড়তে তেমন কমেনি কাঁচা মরিচের দাম। তাদের দাবি- টানা পাঁচ দিন বন্দর বন্ধ থাকবে জেনে কাঁচামাল গুদামজাত করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন আড়তদাররা।
খুচরা ব্যবসায়ী রাশেদ মোড়ল বলেন, 'বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। সব সবজি এবং পেঁয়াজের দামও আকাশ ছোঁয়া। তবে পূজার কারণে পোর্ট বন্ধ থাকায় বাজারে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বস্তা বস্তা কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজ মজুদ করেছিলেন দাম বেশি পাওয়ার আশায়। আমদানি স্বাভাবিক হলে আবার দাম কমে যাবে।'
এদিকে গত তিনদিনে এ বন্দরে কয়েকগুণ বেড়েছে কাঁচা মরিচের আমদানি। গত সোমবার একদিনে ৫০ ট্রাকে ৫৮১ টন ৯৭০ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১২ ট্রাকে ১৪৪ টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। আজ বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৮০ মেট্রিক টন।
কেনা থেকে শুরু করে শুল্ককর মিলিয়ে আমদানি করা এ মরিচের কেজিপ্রতি খরচ পড়েছে ৯৬-১০০ টাকা। অথচ যশোরের বড় বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ যশোরের উপপরিচালক প্রকৌশলী মো: আসলাম শেখ জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রশিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কি না– সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মরিচের দামে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না তাও যাচাই করা হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির বলেন, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে তিনদিনে ৮০৬ টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। বন্দর থেকে খালাস করে নিয়ে যাচ্ছেন আমদানিকারকরা। পচনশীল পণ্য হিসেবে আমরা দ্রুত খালাস দিয়ে থাকি। দাম বাড়ার বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।