ছাত্রলীগের কমিটির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজেই দেখছেন: কাদের
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার গুঞ্জনের মধ্যে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কমিটির বিষয়ে কোনো পরিবর্তন বা সংশোধন-সংযোজনের প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাই সেটা করবেন।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, “এখন যদি ছাত্রলীগের এই কমিটির ব্যাপারে নতুন কোনো বিবেচনা আসে, সংযোজন বা পরিবর্তনের কোনো প্রশ্ন আসে, আমি মনে করি নেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই করতে পারেন। যেহেতু কমিটিটা তিনিই করেছেন, কাজেই কমিটির ব্যাপারে কোনো পরিবর্তন বা সংশোধন-সংযোজনের প্রয়োজন হয় সেটা তিনি নিজেই করবেন।”
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বৈঠকে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে দুপুরের আগে ঘুম থেকে না ওঠা, নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে না যাওয়া, কমিটি দিয়ে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, জামায়াত- শিবির পরিবার থেকে আগত ও ‘বিতর্কিতদের’ পদায়ন নিয়ে আলোচনা হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্রলীগের প্রসঙ্গটি প্রধানমন্ত্রী নিজেই বৈঠকে তুলেছিলেন। সেখানে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেন তিনি।
এরপর মঙ্গলবারের আরেকটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্রলীগের এই দুই শীর্ষ নেতার গণভবনে প্রবেশের পাশও বাতিল করা হয়। ফলে ছাত্রলীগের এই কমিটি ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে গুঞ্জন আরও ঘনীভূত হয়েছে।
ছাত্রলীগের আগাম সম্মেলনের কোনো সম্ভবনা আছে কি না- জানতে চাইলে কাদের বলেন, “আমি এখন পর্যন্ত আগাম সম্মেলনের কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। পুরোপুরিভাবে নেত্রী নিজেই দেখেছেন। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, দলের চারজনকে ছাত্রলীগের বিষয়টি দেখা-শোনার দায়িত্ব দিয়েছেন।”
গত বছরের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে তখনই কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও একই বিভাগের গোলাম রাব্বানিকে সাধারণ সম্পাদক করে দু’বছরের জন্য আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এ বছরের ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হলে, কমিটিতে ‘বিতর্কিত’ অনেকেই অনুপ্রবেশ করেছেন দাবি করে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিত একদল সাবেক নেতা-কর্মী। এ নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে ও টিএসসির ভেতরে তাদের মারধর করেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী ও পদ-পাওয়া নেতারা।
তখন কমিটি থেকে ‘বিতর্কিতদের’ বাদ দেওয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অনশনে বসেন পদবঞ্চিতরা। কিন্তু এক মাসেও তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় দলীয় নেতাদের আশ্বাসে অনশনের সমাপ্তি টানেন এ নেতারা।