বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক সিনেমা; বাজেটের ১৩,০০০ গুণ আয়; অভিনেতারা পেয়েছিলেন মাত্র ৫০০ ডলার
একটি সিনেমার সাফল্য বিচারে মাপকাঠি কী? একটি পদ্ধতি হচ্ছে বক্স অফিসের আয়। তবে এই পদ্ধতিতে ছোট কিংবা বড়—সব পরিসরের সিনেমাকে এক কাতারে ফেলা হয়। কিন্তু অনেক বাণিজ্য বিশ্লেষকের মতে, ১০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের একটি স্বাধীন সিনেমার সঙ্গে ২৫০ মিলিয়ন বাজেটের স্টুডিও প্রযোজিত একটি সিনেমার তুলনা করা উচিত নয়।
এজন্য অনেকেই ছবির সাফল্য বিচার করেন বাজেটের তুলনায় সিনেমাটি কত আয় করেছে, তার ভিত্তিতে। এই মাপকাঠিতে সবচেয়ে লাভজনক সিনেমার জায়গা নিয়েছে ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া একটি স্বল্প বাজেটের ছবি। মুনাফার হারে ছবিটি 'টাইটানিক', 'অ্যাভাটার' ও 'অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম'-এর মতো বিশাল পরিসরের সিনেমাগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক সিনেমা
২০০৭ সালে নির্মাতা ওরেন পেলি কম বাজেটের একটি হরর সিনেমা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এ ছবিতে তিনি ব্যবহার করেন হোম ক্যামেরা, কাজে নেন নতুন অভিনেতাদের।
ছবির নির্মাণ ব্যয় কমাতে তিনি একটি হ্যান্ডহেল্ড বা হাতে ধরার ক্যামেরা ব্যবহার করেন। আর ন্যূনতম পারিশ্রমিকে কাজে নেন স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড-অধিভুক্ত অভিনেতাদের।
এ সিনেমার জন্য সত্যিকার অর্থে কোনো চিত্রনাট্য ছিল না। ছবিটির অনেক দৃশ্যই তাৎক্ষণিকভাবে ভেবে নিয়ে অভিনয় করা হয়। ভৌতিক দৃশ্যগুলোর জন্য ব্যবহার করা হয় প্র্যাকটিক্যাল ইফেক্ট।
এই স্বল্প বাজেটের সিনেমাটি ছিল 'প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি'। নির্মাণে খরচ হয় মাত্র ১৫ হাজার ডলার।
বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি দর্শকদের মন জিতে নেয়। এরপর প্যারামাউন্ট পিকচার্স ছবিটি কিনে নেয়। প্রতিষ্ঠানটি এ ছবির পোস্ট-প্রোডাকশন ও বিপণনে ২ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে।
২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর দারুণ ব্যবসাসফল হয় 'প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি'। বিশ্বব্যাপী ১৯৪.২ মিলিয়ন আয় করে ছবিটি। এ ছবির ফাউন্ড-ফুটেজ ফরম্যাট, ভয়জাগানিয়া আবহত ও নতুনত্ব দর্শকদের মুগ্ধ করে।
নির্মাণ খরচের চেয়ে প্রায় ১৩ হাজার গুণ বেশি মুনাফা তুলে এনে অবিস্মরণীয় গড়ে সিনেমাটি। এ 'প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি'কে ফ্র্যাঞ্চাইজে পরিণত করে। এ ফ্র্যাঞ্চাইজে তিনটি সিক্যুয়েল ও দুটি স্পিনঅফ রয়েছে। সিক্যুয়েল ও স্পিনঅফ মিলিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজটি মোট ৬০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেছে।
'প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি'র অভিনেতারা কম পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন কেন
বাজেট স্বল্পতার কারণে ছবিতে দুই নবাগতকে নেন ওরেন পেলি। ক্যাটি ফেদারস্টন ও মিকা স্লোট তখনও উঠতি অভিনেতা ছিলেন। এ ছবির আগে তাদের ঝুলিতে বলার মতো কোনো কাজ ছিল না।
কাস্টিং কল দেখে তারা অডিশন দেন। পেলি তাদের ন্যূনতম পারিশ্রমিকে কাজে নেন। ফলে তারা প্রত্যেকে মাত্র ৫০০ ডলার করে পারিশ্রমিক পান।
২০০৯ সালের নভেম্বরে দ্য জে লেনো শো-তে এই অভিনেতারা জানান, সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়ে ভালো ব্যবসা করার পর তারা ছবির মুনাফা থেকে বাড়তি আয় পান।