আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে: আফিফ
জয়ের জন্য ১৪৫ রানের লক্ষ্য, ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় আট নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন।
সাধারণত মিডল-অর্ডারেই ব্যাট করতে পছন্দ তার। তবে আট নম্বরে নেমেও যে, ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো যায় এবং একক প্রচেষ্টায় দলকে ম্যাচও জেতানো যায় সেটিই গতরাতে প্রমান করেছেন তিনি।
২৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ২৬ বলে ৫২ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন বাঁ-হাতি ব্যাটস্যান আফিফ। ১৯ বছর বয়সী আফিফের এমন ব্যাটিং নৈপুণ্যে প্রায় হারতে বসা ম্যাচ ৩ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ।
দলকে এভাবে জেতাতে পারায় মনের ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
“সবারই ইচ্ছে থাকে এমন ইনিংস খেলে দেশকে জেতানোর। সিরিজের প্রথম ম্যাচে আমার সেই ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছে।”
আফিফ যখন ক্রিজে যান, ততক্ষণে খাদের কিনারায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে দেন ক্রিকেট ভক্তরা। কারণ মাত্র ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৫১ বলে ৮৫ রান দরকার ছিলো বাংলাদেশের। এ অবস্থায় নিজের প্রথম মুখোমুখি হওয়া বলেই বাউন্ডারি মারেন আফিফ। ইঙ্গিত দেন চমকের। শেষ পর্যন্ত করেছেন তাই। মাত্র ২৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের পথ সহজ করে ফেলেন এই তরুণ।
কিন্তু এমন কঠিন পরিস্থিতির মাঝে দুর্দান্ত হাফ-সেঞ্চুরির পরও কোন উদযাপন করেননি আফিফ। কেন করেননি? ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের উত্তরে আফিফ বলেন, “যখন ফিফটি হয়েছে খেয়াল করিনি। তখন চিন্তায় ছিল ম্যাচ শেষ করার। ভাবনা ছিল ম্যাচ শেষে আনন্দ উদযাপন করব। ম্যাচটা শেষ করতে পারিনি। তার আগেই আউট হতে হয়েছে।”
দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে ম্যাচ জেতালেও, ম্যাচের শেষ পর্যন্ত থাকার আশা পূরণ হয়নি আফিফের। তবে নিজের ব্যাটিং নিয়ে সন্তুষ্ট আফিফ।
তিনি বলেন, “নিজের ব্যাটিং নিয়ে অবশ্যই সন্তুষ্ট। কারণ দল জিততে পারে এমন ইনিংস খেলেছি। নট আউট থাকতে পারলে নিজের কাছে আরও ভালো লাগতো।”
পরিস্থিতি যেমনই হোক, নিজের ইচ্ছে মতো খেলতে পারায় খুশি আফিফ। তাকে কেউ কোন ধরনের পরিকল্পনা বা নিয়ম বেঁধে দেননি বলে জানান তিনি।
“আমার ইচ্ছা ছিলো আমার মতো খেলবো, আমি সব সময় আমার মতো করে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি ব্যাটিংয়ে যাবার আগে আমার সাথে কারো কথা হয়নি। ম্যাচের আগে সবাই আমাকে বলেছে, নিজের মতো করে খেলতে। কেউই বাধা দেয়নি তাই ভালো খেলতে পারছি।”
আফিফের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী
শুক্রবার রাতে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশ দল যখন হারের খুব কাছাকাছি তখন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ম্যাচ শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন বিসিবি বস নিজেই।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী খেলার মাঝেই ফোন করছিলেন। বলছিলেন- পাপন এটা কী হচ্ছে? এ রকম হচ্ছে কেন? উনি তখন চিন্তিত। তারপর যখন আফিফ আসল। আফিফের খেলা দেখে আবার ফোন দিয়ে বললেন- ও আগে নামেনি কেন? ওকে তো আগে দেখিনি! আমি বললাম, আপা সে তুলনামূলকভাবে একদম নতুন এসেছে। মাত্র ১৯ বছর বয়স। তার আসলে পাঁচে খেলার কথা ছিল।”
পাপন জানান, খেলা শেষ হওয়ার পর সাকিব আল হাসান ও আফিস হোসেনের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলিয়ে দেন তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী তাদের কি বলেছেন, সে বিষয়ে আর কিছু বলেননি বিসিবি সভাপতি।