ধোপে টিকল না ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ প্রচারণা, ঝাড়খণ্ডে হারল বিজেপি
বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে আবারো ক্ষমতায় এসেছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতৃত্বাধীন জোট। এই নির্বাচনের আগে প্রচারণায় 'বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের' নিয়ে ভোটারদের মাঝে ভীতি ছড়ানোর কৌশল নেয় বিজেপি। তবে শেষপর্যন্ত তা কাজে আসেনি। ঝাড়খণ্ডের জনগণ তা প্রত্যাখ্যানই করেছে।
জেএমএম প্রধান ও ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য রাজ্যবাস্রিত ইন্ডিয়া জোটের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। জেএমএম নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে রয়েছে কংগ্রস, আরজেডি ও সিপিআইএম (এল), যারা একসঙ্গে ভোটযুদ্ধে লড়েছে – বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে।
আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই ভোট গণনা শুরু হয়। ফলাফল বলছে, এবার ঝাড়খণ্ডে গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় কম আসন পেতে যাচ্ছে বিজেপি। অপরদিকে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, জেএমএম এর নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের আসন সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার হিসেব অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডের ৮১ আসনের মধ্যে ৫৩ আসনে জয় পেতে যাচ্ছে ইন্ডিয়া জোট। বিজেপি জয় পেয়েছে ২৬ আসনে।
নির্বাচনের আগে ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক প্রচারণা চালান বিজেপির শীর্ষ নেতারা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতো বিজেপি হেভিওয়েটদের এই প্রচারণায় যোগ দেন। মাসব্যাপী এই প্রচারণার সময়, প্রায় প্রতিটি জনসভায় তথাকথিত "বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী" প্রসঙ্গ নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিজেপি নেতারা।
প্রচারণায় বিজেপি নেতারা দাবি করেন, জেএমএম অনুপ্রবেশকারীদের লাল গালিচা বিছিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করাচ্ছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ডে এসে আদিবাসী মেয়েদের বিয়ে করে তাদের জমি দখল করছে। জবাবে জেএমএম নেতা হেমন্ত সরেন পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, সীমান্তে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে বিএসএফ থাকার পরও কীভাবে অনুপ্রবেশ চলছে।
স্থানীয় আদিবাসীদের ভোট টানতে মুসলিম-বিদ্বেষ ও বাংলাদেশিদের সম্পর্কে অপপ্রচারের এই কৌশল শেষপর্যন্ত হালে পানি পায়নি। এর অন্যতম কারণ হয়তো, রাজ্যবাসীর মধ্যে হেমন্ত সরেনের গ্রহণযোগ্যতা। তিনিও একজন আদিবাসী। গত জানুয়ারিতে তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়, যা তিনি প্রতিহিংসামূলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই অভিযোগও নির্বাচনে তাঁর পক্ষে কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।