সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা বহাল, থাকছেন না চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে!
আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য রোববার দল ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর আগে সাকিব আল হাসানের বোলিং নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তৈরি হওয়া শঙ্কার কালো মেঘ কেটে যাওয়ার আশায় ছিল বোর্ডসহ ক্রিকেটভক্তরা। কিন্তু দল ঘোষণার আগেরদিন খারাপ খবর দিলো বিসিবি। শনিবার এক বিবৃতিতে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে।
ত্রুটিপূর্ণ বোলিং অ্যাকশনের কারণে সাকিবকে বোলিং থেকে নিষিদ্ধ করে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। ইংল্যান্ডের কোনো ধরনের প্রতিযোগিতায় বোলিং করতে পারবেন না তিনি। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের বাইরের ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বোলিং করতে পারবেন না বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই স্পিনার। আইসিসি স্বীকৃত ইংল্যান্ডের লাফবরো ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল ক্রিকেট পারফরম্যান্স সেন্টারে সাকিবের দেওয়া বোলিং পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বোলিংয়ে ফিরতে আইসিসি স্বীকৃত কোনো পরীক্ষাগারে বোলিং পরীক্ষায় উতরাতে হতো তাকে। কিন্তু গত ২১ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ে শ্রী রামাচন্দ্র সেন্টার ফর স্পোর্টস সায়েন্সে দ্বিতীয় পরীক্ষা দিয়ে উতরাতে পারেনি অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ফলে সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং করার পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাও বহাল থাকবে। বিষয়টি নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছে বিসিবি।
সাকিবকে দলে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল বিসিবি। চেন্নাইয়ে দেওয়া পরীক্ষায় সাকিব উতরে যাবেন, এমন আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে চেন্নাইয়ে দেওয়া পরীক্ষায় বাংলাদেশ অলরাউন্ডার যে পাস করেননি, এই খবর আগেই পেয়েছিল বিসিবি। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিক ঘোঘণার। চেন্নাইয়ের পরীক্ষাগার ইসিবিকে বিষয়টি জানানোর পর তারা বিসিবিকে এ ব্যাপারে জানিয়েছে। সেই খবরটিই আজ বিসিবি বিবৃতিতে জানালো।
এর অর্থ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিবকে খেলালে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলাতে হবে। সাকিবের বয়স, ফর্ম বিবেচনা করলে তাকে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলানো হবে বিলাসিতা। সেই হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে তার না থাকার ব্যাপারটি এক প্রকার নিশ্চিত। বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, কাল ঘোষণা করতে যাওয়া দলে সাকিবকে রাখা হবে না।
১৩ বছর পর কাউন্টিতে ফেরার পর্বে গত সেপ্টেম্বরে সমারসেটের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেন সাকিব। ওই ম্যাচে তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কাউন্টি কর্তৃপক্ষ। মূলত অনফিল্ড আম্পায়াররা রিপোর্ট করার পরে বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের বোলিংকে সন্দেহজনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর কিছুদিন পর ইংল্যান্ডের একটি ল্যাবে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষা দেন তিনি, কিন্তু পাস করতে পারেননি।
সমারসেটের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া সাকিব পরের ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে সারের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ৬৩.২ ওভার বোলিং করেন তিনি। ওই ম্যাচে তার কিছু ডেলিভারি দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন আম্পায়াররা। পরে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হন তারা, এরপরই ইংল্যান্ডের কোনো ক্রিকেটে খেলতে সাকিবকে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে বলা হয়।