মোংলা বন্দরে নিলামে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৭০ গাড়ি, পড়ে আছে আরও ২৩০টি
আমদানিকারকরা ছাড় না করায় শেষ পর্যন্ত নিলামে উঠেছে মোংলা বন্দরে আটকে থাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৭০টি গাড়ি। সোমবার (২০ জানুয়ারি) মোংলা কাস্টমস হাউস এসব গাড়ি নিলামে তোলে।
এর আগে গত মাসে এগুলো বিক্রির জন্য মোংলা কাস্টম হাউসে হস্তান্তর করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
গাড়িগুলো নিলামে কিনতে চট্রগ্রাম, ঢাকা, খুলনা ও মোংলা কাস্টমস হাউসে দরপত্র জমা দেওয়া ছাড়াও, অনলাইনে বিট করেছেন ব্যবসায়ীরা। আগামী ২৯ জানুয়ারি দরপত্র খোলা হবে এবং যাচাই-বাছাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতাকে প্রাপ্ত গাড়ির বিক্রয় আদেশ জারি করা হবে।
মোংলা কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার মো. রুবেল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় বন্দরে আনা সাবেক সংসদ সদস্যের তিনটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িও নিলামে তোলা হয় গত ২০ নভেম্বর। তবে এখনও সেগুলো বিক্রির আদেশ হয়নি।
গত বছরের ১৭ জুলাই টাঙ্গাইল-৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববি এসব গাড়ি মোংলা বন্দরে আমদানি করেন। তারা এখন পলাতক।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক সূত্র জানায়, মোংলা বন্দরে আমদানির পর ইয়ার্ড এবং বিভিন্ন শেডে রাখা নির্ধারিত সময়সীমা ৩০ দিনের বেশি অতিবাহিত হওয়ায় নিলামে বিক্রির জন্য মোংলা বন্দর থেকে ৩০০টি গাড়ি কাস্টমসের কাছে গত মাসে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে এলিয়ন, ফিল্ডার, হাইব্রিড, প্রাডো ল্যান্ড ক্রজার, ভেসেল, হারিয়ারসহ ৭০টি নামি দামি গাড়ি নিলামে তোলে মোংলা কাস্টম।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান জানান, 'পদ্মা সেতুর কল্যাণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়া এই বন্দরে গাড়ি আমদানি বেড়েছে। তবে বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে খালাসের পর দীর্ঘদিন ছাড় না করায় দ্রুত এসব গাড়ি কাস্টমকে নিলামের মাধ্যমে বিক্রির তাগিদ দেন তারা।
একই সঙ্গে দীর্ঘদিন গাড়ি পড়ে থাকায় বন্দরের শেডে শুধু জায়গার অপচয়ই নয়,পাশাপশি এসব গাড়ি অকেজো বা বিকল হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মোংলা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার মো. রুবেল হাসান বলেন, '২০০৯ সালের ৩ জুনে জাপান থেকে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। মোংলা কাস্টমের রাজস্ব আয়ের শতকরা ৫২ শতাংশ আসে আমদানি করা গাড়ির শুল্ক থেকে। তবে আমদানি করা গাড়ি দীর্ঘদিন বন্দরে পড়ে থাকলে অন্যান্য পণ্য রাখায় সমস্যা তৈরি হয়। নিলাম প্রক্রিয়া চালু রাখলে গাড়ি বা অন্যান্য পণ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের সুবিধার পাশাপাশি সঠিক সময়ে সরকারের রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমদানিকারকরা সময়মতো গাড়িসহ অন্যান্য পণ্য ছাড় না করার কারণে তা নিলামযোগ্য হয়। পরে তা নিলামের মাধ্য বিক্রি করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০ জানুয়ারি মোংলা বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ৩০০টি গাড়ির মধ্যে ৭০টি বিলাসবহুল গাড়িসহ অন্যান্য পণ্য নিলামে তোলা হয়েছে। এসব গাড়ি নিলামে কিনতে চট্রগ্রাম, ঢাকা, খুলনা ও মোংলা কাস্টমস হাউসে দরপত্র জমা দেওয়া ছাড়াও অনলাইনে বিট করেছেন ব্যবসায়ীরা।'
আগামী ২৯ জানুয়ারি দরপত্র খোলা হবে এবং যাচাই বাছাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতাকে প্রাপ্ত গাড়ির বিক্রয় আদেশ জারি করা হবে। বাকি ২৩০টি গাড়িও পর্যায়ক্রমে নিলামে তোলা হবে।
এছাড়া গত বছরের ২০ নভেম্বর নিলামে তোলা হয় শুল্কমুক্ত সুবিধায় মোংলা বন্দরে আনা সাবেক সংসদ সদস্যের তিনটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িও। তবে সেগুলোর এখনও বিক্রয় আদেশ জারি হয়নি বলেও জানান তিনি।
মোংলা কাস্টম হাউসের নিলাম শাখা জানায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৪টি নিলামের মাধ্যমে দুই হাজার ২০০ গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এর মধ্যে তারা মাত্র ২০০টি গাড়ি বিক্রি করতে পেরেছেন তারা।