৩২০ কোটি টাকায় মুক্তাগাছায় নির্মিত ২০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু জুনে
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ৩২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে মুক্তাগাছা সোলারটেক এনার্জি লিমিটেডের (এমএসইএল) ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। দ্রুতগতিতে প্রকল্পের নির্মাণকাজ এগোনোয় চলতি বছরের জুন মাস থেকেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবে।
জুন মাস থেকে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুৎ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পিভিএস) স্থানীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এমএসইএল প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ৮ টাকা ১২ পয়সা পাবে। পিভিএস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থানীয় গ্রাহকদের এই বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্যমতে, শীতকালে মুক্তাগাছায় ৩০ মেগাওয়াট এবং গ্রীষ্মকালে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। বর্তমানে পিভিএস এই চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম। এমএসইএলের সৌরবিদ্যুৎ যুক্ত হলে মুক্তাগাছার বাসিন্দারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পাবেন। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, মুক্তগাছা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছি না। ফলে লোডশেডিং ও ভোল্টেজ সমস্যা হচ্ছে। এমএসইএল-এর প্রকল্প থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপন্ন শুর হলে মুক্তাগাছাবাসী অনেক উপকৃত হবে। কলকারখানায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে, যা এই এলাকার জনজীবনে অনেক বড় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। একই সাথে কল-কারখানার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে এবং ওই অঞ্চলে শিল্পায়নে সহায়ক হবে।
২০২৪ সালের জুনে এমএসইএল এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে। প্রকল্পটি মুক্তাগাছার প্রত্যন্ত এলাকায় পরিত্যক্ত ৭০ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। জলাবদ্ধ এবং দূর্গম হওয়ায় এসব জমি কৃষি বা অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হতো না।
জুলস্ পাওয়ার লিমিটেডের (জেপিএল) সহযোগিতায় প্রকল্পটি ২২ বছরের জন্য বার্ষিক লীজ নিয়ে নির্মিত হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় জমি ভরাট না করে পিলারের ওপর সৌরপ্যানেল স্থাপন করা হচ্ছে।
জেপিএল কর্মকর্তা মো. মেহেদুল ইসলাম বলেন, জমির মালিকরা এতদিন কোনো উপকার পেতেন না। এখন প্রতি বছর ভাড়ার টাকা পাবেন। এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।
প্রকল্পটি বছরে ৩৭ দশমিক ৯ গিগাওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে এবং ১৮ হাজার ৩৪৪ টন কার্বন নিঃসরণ এড়াবে।
এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯৭৮ জন স্থানীয় কর্মী এই প্রকল্পে কাজ করছেন। উৎপাদন শুরু হলে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
আব্দুল মালেক নামে একজন জমির মালিক বলেন, জলাশয় ও কচুরীপানার মাঝে আমার জমি, তাই সেটি পতিত থাকত। সেজন্য আগে আমি জমি কোনো কাজে লাগাতে পারতাম না। এই পরিত্যক্ত জমি থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পেতাম না। বর্তমানে জমি লীজ দিয়ে প্রতি বছর ভাড়ার টাকা পাব। এতে আমার আয়ের ব্যবস্থা হবে।