বাড়তি শুল্ককরের প্রভাবে বেনাপোল দিয়ে কমেছে ফল আমদানি
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিকৃত ফলের চালান উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। আপেল, আঙুর, কেনু, মালটা ও ডালিমের মতো ফল আমদানিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ককর বাড়ানোর পর এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত ৯ জানুয়ারি এনবিআর ফল আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করে। এর ফলে প্রতি কেজি ফলের শুল্ক ১০১ টাকা থেকে বেড়ে ১১৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
ফল আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
তবে রমজানের আগে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ১৫০টি ট্রাকে বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ও কাঁচামাল আমদানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাকের পণ্য থাকত আপেল, আঙুর, কেনু, মালটা ও ডালিম।
তবে নতুন শুল্ক আরোপের পর আমদানি কমে গেছে। খুচরা বাজারেও ফলের দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে আপেল প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৩০০-৩৬০ টাকা, মালটা ৩০০-৩২০ টাকা, কমলা ২৫০-৩০০ টাকা, আঙুর ৪৫০-৫০০ টাকা এবং ডালিম ৪৫০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতারা শুল্ক বৃদ্ধিতে নাখোশ। ক্রেতা জাহিদ হাসান জানান, দুই মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি ফলের দাম ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে। রমজানে দাম আরও বাড়লে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফল কেনা অসম্ভব হয়ে যাবে।
যশোর শহরের চৌরাস্তার ফল বিক্রেতা সাইদুর রহমান জানান, আমদানিকারকেরা বেশি দামে পণ্য সরবরাহ করায় খুচরা বিক্রেতাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
যশোর জেলা ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম লিটন বলেন, যশোরের শতাধিক আমদানিকারক বছরে শত কোটি টাকার ফল আমদানি করেন। এর সঙ্গে প্রায় ১০ হাজার মানুষের জীবিকা জড়িত।
তিনি বলেন, 'দাম বেড়ে সাধারণ মানুষ ফল কিনছে না, আর বাড়তি শুল্ক ব্যবসায়ীদের আরও চাপে ফেলেছে।' তিনি শুল্ক কমানোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ফলের বাজার তৈরির দাবি জানান।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী শ্যামল কুমার নাথ জানান, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ফলের আমদানি কমেছে। 'তবে যেসব ফল আসছে, সেগুলো দ্রুত খালাসে সহায়তা করা হচ্ছে।'