সাকিবকে ছাড়িয়ে বিপিএলের রেকর্ড চূড়ায় তাসকিন
হারিয়ে যাওয়ার মুখ থেকে ফিরে এসে নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছিলেন। এই ফেরার অধ্যায়ে যতো সময় গেছে, নিজেকে ততো শাণিত করেছেন তাসকিন আহমেদ। ২০১৯ বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ার কান্না মুছে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন ডানহাতি এই পেসার। গত কয়েক বছর ধরে তিনি বাংলাদেশের পেস আক্রমণের নেতা। ঘরে-বাইরে সবখানে দেখিয়েছেন দাপট, যা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) জারি রেখেছেন তাসিকন।
দুর্বার রাজশাহীর হয়ে শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করে আসা অভিজ্ঞ এই পেসার সাফল্যের ভেলায় চড়ে এবার উঠে গেলেন রেকর্ডের চূড়ায়। বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়া বোলার এখন তাসিকন। এ পথে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন সাকিব আল হাসানকে। বিপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া বোলারও এখন তিনি, এই রেকর্ডে তাসকিন পেছনে ফেলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, রুবেল হোসেন, শরিফুল ইসলামদের।
এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটি ছয় বছর নিজের দখলে রেখেছিলেন সাকিব। ২০১৯ বিপিএলে ঢাকা ডাইনামাইটসের হয়ে ২৩ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। রেকর্ডটি গড়তে সাকিবকে খেলতে হয় ১৫টি ম্যাচ। তবে তাসকিনের এতো ম্যাচ খেলতে হয়নি, ১১ ম্যাচেই সাকিবকে ছাড়িয়ে রেকর্ড চূড়ায় উঠে গেছেন তিনি। দুর্বার রাজশাহীর নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশ পেসারের উইকেট ২৪টি। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় দুইয়ে থাকা ফাহিম আশরাফ বেশ পিছিয়ে, পাকিস্তানি এই পেসারের উইকেট ১৭টি।
২৪ উইকেট নিয়ে রেকর্ড পাতায় সবার উপরে বসা তাসকিনের সুযোগ আছে সীমানা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার। লিগ পর্বে তার দল ১১টি ম্যাচ খেলেছে, আরও একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন তিনি। প্লে-অফে খেলার সুযোগও মিলতে পারে রাজশাহীর। ১১ ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বর দল তারা। শেষ ম্যাচে জিতলে প্লে-অফ খেলার সুযোগ ভালোভাবেই টিকে থাকবে দুর্বার রাজশাহীর। সেটা হলে আরও কয়েকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলতে পারে তাসকিনের, বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে উইকেটসংখ্যাও।
বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে পাশাপাশি নাম ছিল মাশরাফি, রুবেল, শরিফুলদের। ভিন্ন ভিন্ন আসরে এই তিন পেসারই ২২টি করে উইকেট নেন। এই তিনজনকে ছাড়িয়ে গেছেন তাসকিন, সঙ্গে বিপিএলের ইতিহাসেই এক আসরে পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক এখন তিনি। মাশরাফি, রুবেল, শরিফুল ছাড়া বিপিএলের ইতিহাসে ২২ উইকেট নেওয়া বাকি বোলারের নাম কেভন কুপার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই পেসার ২০১৫ বিপিএলে বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হন।
দুর্বার ছন্দে থাকা তাসকিন সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আসরে গড়েছেন আরও রেকর্ড। গত ২ জানুয়ারি ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ৪ ওভা ১৯ রান খরচায় ৭টি উইকেট নেন তিনি, যা বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিং। এই রেকর্ডে তিনি ছাড়িয়ে যান পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমিরকে। কয়েক বছর রেকর্ডটি দখলে রাখা আমির ২০২০ বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ১৭ রানে নেন ৬ উইকেট।
ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ৭ উইকেট নিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিংয়ের মালিক হন তাসকিন, এই রেকর্ডেও তিনি পেছনে ফেলেন সাকিবকে। ২০১৩ ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) বার্বাডোস ট্রাইড্রেন্টসের হয়ে ৪ ওভারে ৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে রেকর্ডটি গড়েছিলেন সাকিব।