ছবির গল্প: শব্দ শুনে ছবি তোলেন জন্মান্ধ ফটোগ্রাফার!
বছর কয়েক আগে আইসল্যান্ডে ছুটি কাটাতে গিয়ে নর্দার্ন লাইটসের শব্দ শুনেছিলেন প্রণব লাল। সেই শব্দ ছবি হয়ে তার মনে গেঁথে রয়েছে।
ভারতের নয়া দিল্লিতে একজন কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন জন্মান্ধ প্রণব। তবু 'দ্য ভয়েস' [The vOICe] নামে এক প্রযুক্তির সাহায্যে তিনি 'দেখতে'ও পান। ওই প্রযুক্তির লাইভ ক্যামেরা ইমেজগুলোকে শব্দে রূপান্তর করে।
ডাক প্রকৌশলী পিটার মেইয়ার ১৯৮০-এর দশকে 'দ্য ভয়েস' উদ্ভাবন করেন। শুরু থেকেই এটি অন্ধদের জন্য এক দারুণ যন্ত্র হয়ে ওঠে। মেইয়ারের 'সিয়িং উইথ সাউন্ড' নামে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ক্যামেরাওয়ালা ওই বিশেষ চশমা পাওয়া যায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলেও বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায় এর অ্যাপ।
অন্যদিকে, প্রণব তো নিজের ল্যাপটপ স্ক্রিনে সফটওয়ারটি ব্যবহার করে অনলাইনে কেনা-কাটা করেন এবং মহাবিশ্বের ছবিও দেখেন!
'এইসব ইমেজ সাউন্ডকে ঠিকঠাক বুঝতে শেখাই বড় চ্যালেঞ্জ,' সিএনএনকে বলেন মেইয়ার।
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ২০০০-এর দশকের শুরুতে ফটোগ্রাফি শেখেন প্রণব। 'সিয়িং উইথ সাউন্ডের মেইলিং লিস্টে যুক্ত হওয়ার পর আমি ধীরে ধীরে নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করি: এই যে শব্দ শুনছি, সেটি আসলে কী জিনিস?'
তিনি জানান, 'যা আমি দেখছি, সেটি দুনিয়ার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার দরকার ছিলই আমার, যেন অন্যরা প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে পারে।'
এই ভাবনা থেকেই ল্যান্ডস্কেপ ও আর্কিটেকচারের ওপর মূল ফোকাস রেখে ছবি তোলা শুরু করেন প্রণব।
'আমার কাছে এটি ফটোগ্রাফির চেয়ে বরং পরিবেশ আবিষ্কার ও তার ওপর নজর রাখার একটি জার্নি,' বলেন তিনি। 'যেখানেই যাই, আমার পক্ষে এখন একজন সত্যিকারের পর্যটক হয়ে ওঠা সম্ভব হয়।'
প্রণবের ফটোগ্রাফি ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। তিনি বলেন, 'আমার তোলা বেশির ভাগ ছবিই আলো, ছায়া ও আকারের খেলা।'
চলুন, তার তোলা কিছু ছবি দেখা যাক:
- সূত্র: সিএনএন