নতুন ১০ দফা দাবি: ক্যাম্পাসে আবার সরব বুয়েট শিক্ষার্থীরা
মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় বিক্ষোভ স্থগিত ঘোষণা করার পর বুধবার সকাল এগারোটায় বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়র শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন।
রোববার গভীর রাতে তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্যাতন করে হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা গত তিন দিন ধরে এই আন্দোলন করছেন।
সকালে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসেন। তারা এ সময় আবরারা হত্যাকারীদের শাস্তি প্রদান ও তাদের দাবিগুলো মেনে নিতে শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার তারা ৮ দফা দাবি পেশ করলেও আজকের কর্মসূচিতে দাবির সংখ্যা দুটি বেড়েছে। তাদের দাবিগুলো হল:
১। খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান;
২। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘটনার জন্য দায়ী শিক্ষার্থীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার;
৩। মামলা চালানোর যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে এবং আবরারের মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণও দেবে তারা;
৪। মামলার নিষ্পত্তি দ্রুততার সঙ্গে করার জন্য বিচারিক ট্রাইব্যুনাল গঠনে তাগাদা দিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে;
৫। মামলার চার্জশিট খুব দ্রুত তৈরি করতে হবে;
৬। ছাত্র সংগঠনগুলো সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বলে ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে;
৭। আবরারের হত্যার পর ক্যাম্পাসে অনুপস্থিতি ও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণগুলো উপাচার্যকে ব্যাখ্যা করতে হবে;
৮। র্যাগিংয়ের নামে সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে;
৯। ১১ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে গৃহীত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে জানাতে হবে;
১০। হলে সিট প্রদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়ার দায়ে শের-ই-বাংলা হলের হলের প্রাধ্যক্ষকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে সরিয়ে দিতে হবে।
ওদিকে, আবরার যে বিভাগে পড়াশুনা করতেন, সেই তড়িৎপ্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।
তারা আবরার ফাহাদের হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছাত্রলীগের সদস্যদের সর্বোচ্চ শাস্তিও দাবি করেছেন।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে নীরব বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, “খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি আমরা। এ ধরনের হৃদয়বিদারক ঘটনা যাতে ক্যাম্পাসে আর না ঘটে সেটাও চাই আমরা।”
“বুয়েট ক্যাম্পাসে যে কোনো ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করতে আমরা সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেব”—যোগ করেন অধ্যাপক শফিকুল।