বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ সিলগালা
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে ক্যাম্পাসের সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পর এবার বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি জামিউস সানির এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের কক্ষ সিলগালা করে দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য জানান।
বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার জামিউস সানী আহসান উল্লাহ হলের ৩২১ নম্বর কক্ষে এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল শেরে বাংলা হলের ৩০১২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এরমধ্যে আবরার হত্যা মামলার এক নম্বর আসামী রাসেল বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে সিট দখল, রুমে ডেকে নির্যাতন এবং র্যাগিং বন্ধে প্রশাসন থেকে দেওয়া নোটিশের পর এই ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষে তালা দিয়ে সিলগালা করে দেয় প্রশাসন।
গত সপ্তাহে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে দফায় দফায় মারের কারণে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ মারা যান। আবরারের মৃত্যুর পর ক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
শুক্রবারের এই আলোচনায় সবার উপস্থিতিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি এবং শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য।
পাশাপাশি আবরার হত্যায় জড়িত ১৯ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণাও দেন তিনি।
এরপর শিক্ষার্থীরা আরও ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তাদের পাঁচ দফার মধ্যে রয়েছে,
১। আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে মর্মে নোটিস জারি করা;
২। মামলার সব খরচ বহন ও তার পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বুয়েট প্রশাসন বাধ্য থাকবে সেটিও নোটিশে লেখা থাকতে হবে;
৩। বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে হলগুলো থেকে অছাত্র ও অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত; ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যালয় সিলগালা করা;
৪। আগে সংঘটিত শিক্ষার্থী নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে ঘটলে তা প্রকাশের জন্য ‘বিআইআইএস’ অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম যুক্ত করা; সে সঙ্গে অ্যাকাউন্টটির পূর্ণ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করে দায়ীদের শাস্তি দিতে কমিটি গঠন;
৫। প্রত্যেক হলের সব তলায় সিসিটিভি ক্যামেরা যুক্ত করে সার্বক্ষণিক মনিটরিং।