দুবাইয়ের বন্দী রাজকুমারীর ব্যাপারে আরব আমিরাতকে প্রশ্ন করবে জাতিসংঘ
দুবাইয়ের প্রিন্সেস লতিফা তার বাবার বিরুদ্ধে তাকে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ এনেছেন। ২০১৮ সালে তিনি শহর থেকে পালাবার চেষ্টা করার পর থেকেই তাকে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
গোপনে ধারণকৃত কিছু ভিডিও তিনি বিবিসিকে দিয়েছেন, যেখানে লতিফা নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন বলে জানান। তার এই ভিডিও প্রকাশের ফলে জাতিসংঘ একটি তদন্ত করার কথা জানিয়েছে এবং যুক্তরাজ্য একে 'গভীর সমস্যা' বলে উল্লেখ করেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডমিনিক রাব বুধবার বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। যুক্তরাজ্য এই ব্যাপারে জাতিসংঘের যে কোনো পদক্ষেপকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলেও তিনি জানান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার প্রিন্সেস লতিফার বিষয়ে শীঘ্রই সংযুক্ত আরব আমিরাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানিয়েছে।
মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল বলেন, "আমরা অবশ্যই এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অন্যান্য নির্দেশাবলির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে এই ঘটনাটি।"
এছাড়াও আরও একজন মুখপাত্রের বরাতে জানা যায়, জাতিসংঘের আর্বিট্রারি ডিটেনশন নিয়ে কাজ করছে যে গ্রুপ তারাও হয়ত প্রিন্সেস লতিফার ভিডিওর ব্যাপারে তদন্ত করতে পারে।
প্রিন্সেস লতিফার বাবা শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্রপ্রধানদের একজন। তিনি দুবাইয়ের শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট। শেখ মোহাম্মদ একটি চমৎকার সম্পদশালী শহর বানাতে সক্ষম হলেও মানবাধিকার কর্মীদের দাবি যে সেখানে ভিন্নমত পোষণের কোনো সুযোগ নেই এবং বিচারব্যবস্থায় পর্যন্ত নারীর প্রতি বৈষম্য কাজ করে।
প্রিন্সেস লতিফা ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্ধুবান্ধবের সহায়তায় দুবাই থেকে পালিয়ে যান এক নতুন জীবনের আশায়। পালিয়ে যাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে করা এক ভিডিওতে লতিফা জানিয়েছিলেন, তাকে গাড়ি চালানো কিংবা কোথাও বাইরে ঘোরার অনুমতি দেওয়া হয়না।
কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার একদিন পরই লতিফাকে কমান্ডো বোটের সাহায্যে ভারত সাগর থেকে ধরে আনা হয়। সেই থেকে তিনি দুবাইয়ে বন্দী অবস্থায় আছেন। যদিও লতিফার বাবার দাবি প্রিন্সেস লতিফা পরিবারের তত্ত্বাবধানেই ভালোভাবেই আছেন।
শেখ মোহাম্মদের বেশ বড় রকমের একটি ঘোড়দৌড় এর প্রতিষ্ঠান আছেন এবং এ কাজের সূত্রে নানা ইভেন্টে তাকে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গেও দেখা গেছে। কিন্তু প্রিন্সেস লতিফা ও তার সৎ মা প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল হুসাইন, যিনি ২০১৯ এ তার দুই সন্তান নিয়ে লন্ডন পালিয়ে গেছেন, তাদের দুজনের ওপর নির্যাতনের দায়ে শেখ মোহাম্মদ ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন।
প্রিন্সেস লতিফার ভিডিওটি বিবিসি প্যানারোমার হাতে আসে যেখানে তার অবস্থান সপর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
- সূত্র:বিবিসি