বিশ্বব্যাংকের ভ্যাকসিন তহবিল পেতে পারে বাংলাদেশসহ ১১টি দেশ
ভ্যাকসিন উৎপাদক সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সংগতিপূর্ণ করার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর মাধ্যমে কোন দেশ কী পরিমাণ চালান পাচ্ছে সে সম্পর্কে উৎপাদকদের থেকে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে। দরিদ্র দেশে আরও ভ্যাকসিন সরবরাহ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ভিত্তিক দাতা গোষ্ঠীটির প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস গত শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, মার্চের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ ১২টি দেশের জন্য ১৬০ কোটি ডলার তহবিল বরাদ্দ দেবে বলে তিনি আশা করছেন। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, তিউনিশিয়া এবং ইথিওপিয়ার মতো উন্নয়নশীল দেশ এখান থেকে সহায়তা পেতে পারে। তারপর আরও ৩০টি দেশকে ভ্যাকসিন তহবিলের আওতায় আনা হবে।
বিশ্বব্যাংক ১২শ' কোটি ডলারের একটি তহবিল থেকে কম আয়ের দেশগুলোর জন্যে টিকার ডোজ কিনবে। এরপর সেগুলো বিতরণের সক্ষমতা বাড়াতেও সংশ্লিষ্ট সরকার সমূহের সঙ্গে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। একইসঙ্গে, উৎপাদকদের সঙ্গে করা সরকারি চুক্তিকেও সংগতিপূর্ণ ও মানোপযোগী করা তাদের মূল উদ্দেশ্য। উদ্যোগটির মাধ্যমে দরিদ্র দেশে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিয়ে বৈষম্য কমাতে চায় দাতা গোষ্ঠীটি।
বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি অর্থায়ন সংস্থা- ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্প, ইতোমধ্যেই উৎপাদক সংস্থার কারখানা ও অবকাঠামো সক্ষমতা বাড়াতে ৪শ' কোটি ডলার বিনিয়োগের জন্যে প্রস্তুতি নিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশেও এই বিনিয়োগ যাবে। তবে সেজন্য বর্তমানে উৎপাদিত ডোজের চালান কোথায় যাচ্ছে- সেসব তথ্য-উপাত্ত দরকার।
"নতুন সক্ষমতা তৈরির জন্যে আমরা বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু, বিদ্যমান সক্ষমতা থেকে কোন কোন দেশ ডোজের চালান পাচ্ছে- তা জানা দরকার। না হলে নতুন পুঁজি ঠিক কোথায় বেশি দরকার- সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়," রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান ম্যালপাস। এ উদ্যোগের আওতায় নতুন বা বিদ্যমান কারখানার সম্প্রসারিত অংশে ভবিষ্যতে অন্যান্য রোগের টিকাও উৎপাদন করা যাবে, বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ম্যালপাস বলেন, উন্নয়নশীল দেশে ডোজ সরবরাহের জন্যে নির্ধারিত উন্নত দেশগুলোর ওষুধ কারখানার সক্ষমতা বাড়াতে তহবিলটি থেকে বিনিয়োগ করা হতে পারে।
গত শুক্রবার ছিল জি-৭ সদস্য সাতটি ধনী দেশের বৈঠক। সেখানে তারা মহামারি মোকাবিলায় সহযোগিতার মাত্রা বিস্তৃত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ম্যালপাস আশা করেন, এরফলে টিকাপ্রাপ্তিতে অনেক পিছিয়ে থাকা স্বল্প আয়ের দেশে ডোজ সরবরাহের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা- নামক একটি অনলাইন বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা অনুসারে, টিকাপ্রদানে পুরো বিশ্বে শীর্ষ স্থানে আছে ইসরায়েল। সেখানে টিকাদানের অনুপাত প্রতি ১০০ জনে ৮২ জন। সেই তুলনায় বাংলাদেশ ও ভারতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে একজনেরও কম ব্যক্তি টিকা পেয়েছেন। আফ্রিকার অনেক দেশে টিকাদান শুরুই হয়নি।
- সূত্র: রয়টার্স