উন্নত জাতের বিটি তুলার পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা
দুই ধাপের পরীক্ষা শেষে এখন তুলার উৎপাদন এলাকায় ফিল্ড ট্রায়ালের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে বিটি কটন। অনুমতি পেলে আগামি জুলাই-আগষ্টেই এ ট্রায়াল চালানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) গবেষণাগারে গ্রিণ হাউজ ট্রায়াল হয়েছে। তাতে ভালো ফল পাওয়ায় পরের বছর নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে গাজিপুরের শ্রীপুরে ফিল্ড ট্রায়াল করা হয়। সেখানেও ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আখতারুজ্জামান দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'গ্রীন হাউজের পর ফিল্ড ট্রায়ালেও ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। বিটি কটনের পাতায় মিলেছে বলওয়ার্মস বা গুটিপোকার আক্রমন প্রতিরোধের প্রমাণ। একই সঙ্গে পরীক্ষায় বিটি জিনের অস্তিত্ব ও তার বৈশিষ্ট্যগুলো পাওয়া গেছে।'
জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে টেকনিক্যাল কমিটি বিটি কটনের ট্রায়ালের ফলাফল নিয়ে একটি সভা করে। এই সভায় ট্রায়ালের ফলাফল ও তার পক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে তুলা উন্নয়ন বোর্ড।
বিএআরসি ফলাফল কৃষি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কমিটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে এগুলো পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখানে জিএম পণ্যের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করবে মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় জৈব সুরক্ষা কমিটি। কমিটির অনুমোদন পেলে তবেই তা বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে পারবে।
তুলা উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পরীক্ষামূলক উৎপাদনের দুই ধাপে কয়েকটি জিনিস দেখা হয়েছে। কটনের গুটিপোকার পোকার আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে বিটি কটন। তাছাড়া, এর মধ্যে জিনগত যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা দরকার তাও পাওয়া গেছে। পাশাপাশি হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ৩.৫ টনের কাছাকাছি। যেখানে সাধারণ কটনের উৎপাদন ২.৫-৩ টন।
জানতে চাইলে বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. আলহাজ উদ্দিন আহাম্মেদ টিবিএসকে বলেন, 'আমরা দুই ধাপের পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষ করে ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছি। এখন অনুমোদন পেলে আগামী মৌসুমে বিভিন্ন অঞ্চলে ট্রায়াল শুরু করবো।'
নতুন বীজটির বৈজ্ঞানিক নাম ব্যাসিলাস থারিঙ্গিয়েনসিস (বিটি) কটন। এর দুটি জাত জাতের পরীক্ষা হচ্ছে দেশে- জেকেসিএইচ ১৯৪৭বিটি এবং জেকেসিএইচ ১৯৫০ বিটি। জাত দুটি বাংলাদেশের উপযোগী কিনা- সেটাই দেখা হচ্ছে পরীক্ষার মাধ্যমে।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগীতায় ভারতের জেকে এগ্রি জেনেটিকস লিমিটেড জাতগুলো সরবরাহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জেকে সিডস নামেই পরিচিত। তুলা উৎপাদনে স্বয়ংসমম্পূর্ণ হওয়ার লক্ষ্য থেকেই সরকার বিটি কটনের পরীক্ষা-নীরিক্ষার অনুমতি দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশ তুলা চাহিদার ২৫ শতাংশই ভারত থেকে আমদানি করে থাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে সরকার বিটি কটনের পরীক্ষার অনুমোদন দেয়।