হাইকোর্টে ড. ইউনূসের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা
নিজ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ পালন না করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ দুইজন হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এরপর তাদেরকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
একই সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পুনর্নিয়োগের বিষয়ে জারি করা রুলটি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর ২২ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে বেলা ১১টা ৫ মিনিটে আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন নোবেল ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। তাকে ১৬ মার্চ ভার্চুয়ালি হাজির হয়ে আদালত অবমাননার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ৩৮ জন কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, আমরা আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেছি। গ্রামীণ টেলিকমের ৩৮ জন বেতন পাচ্ছেন।
তখন রিটকারীদের আইনজীবী বলেন, এটি সত্য নয়।
পরে আদালত অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। একইসঙ্গে শুনানির জন্য ২২ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আশরাফুল হাসানকে তলব করেন হাইকোর্ট। ১৬ মার্চ বেলা ১১টায় তাদের আদালতে ভার্চুয়ালি হাজির হতে বলা হয়। একইসঙ্গে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেন আদালত।
আদালত আদেশে বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পিটিশনারদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। প্রফেসর মুহাম্মাদ ইউনূস এবং মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হিসেবে ওই আদেশ অনুসরণ করেননি। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রাথমিক সত্যতা পরিলক্ষিত হওয়ায় রুল জারি হয়েছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামারুজ্জামানের আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী জানান , শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়েছে।
এরপর সেই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আদালত ৩৮ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। একারণে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। সেই মামলার শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তাকে ব্যক্তিগত হাজিরার নির্দেশ দেন।