আমাজন, ইবে, আলিবাবার মতো বৈশ্বিক প্লাটফর্ম করতে চায় বিজিএমইএ
- ভাচুর্য়াল মার্কেটপ্লেসের জন্য ১০০ কোটি টাকা
- অনলাইনে খুচরা পণ্য রপ্তানিতে সর্বোচ্চ ১৫% নগদ প্রণোদনা
- রিসাইক্লিং শিল্প প্রতিষ্ঠায় ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১০% ভর্তুকি
- ডিজিটাল পেমেন্টে মজুরি দিলে ২% করছাড়
- ৫০০ কোটি টাকার এসএমই এ্যাসিসটেন্স ফান্ড গঠন
- গবেষণা, উন্নয়নে ১০০% ভর্তুকি
- শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে ২১৪ কোটি
অনলাইন মার্কেট প্লেস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে নিজস্ব ব্রান্ডের তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে বৈশ্বিক ব্রান্ড আমাজন, ইবে ও আলিবাবার মতো প্লাটফর্ম গড়ে তুলতে আগামী বাজেটে অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। সরকারের সহায়তায় এই ওয়েব-প্লাটফর্ম তৈরি করার পর পোশাক কারখানাগুলো এই ভার্চুয়াল মার্কেটপ্লেসে তাদের শপ-ফ্রন্টের মাধ্যমে সরাসরি আন্তর্জাতিক ক্রেতা পর্যায়ে পণ্য সরবরাহ করবে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাজারে অনলাইন প্লাটফর্মে খুচরা পর্যায়ে নিজস্ব ব্রান্ডের তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে চায় বিজিএমইএ। এজন্য রপ্তানির বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা চেয়েছে সংগঠনটি।
বিজিএমইএ'র প্রস্তাবে পোশাকখাতে উৎপাদিত টেক্সটাইল বর্জ্য রিসাইকেল করে সার্কুলার ফ্যাশন পণ্য তৈরি ও রপ্তানিতে আগামী ১০ বছর ধরে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা এবং কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনা, ঋণের সুদ মওকুফ করা, শ্রমিকদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে পাঠানো ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক লিখেছেন, 'বিশ্ববাজার অনলাইন মার্কেটের দিকে ঝুঁকছে। পরবর্তী বিশ্বে অনলাইন কেনাকাটা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তাই নিজস্ব ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে নিজস্ব ব্রান্ডের পণ্য বিক্রয় করতে পারলে বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন প্লাটফর্ম দাঁড়িয়ে যাবে, যা আমাজন, ইবে কিংবা আলিবাবার সমতুল্য হবে। অন্যদিকে নিজস্ব ব্রান্ডের পণ্য তৈরিতেও আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাব।'
ভাচুর্য়াল মার্কেটপ্লেসের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
ভার্চুয়াল মার্কেটপ্লেস স্থাপন সম্পর্কে বিজিএমইএ বলেছে, ইতোমধ্যে তারা 'বিজনেস টু বিজনেস' এবং 'বিজনেস টু কনজ্যুমার' পোর্টাল স্থাপন ও ভার্চুয়াল বাজারে নিজস্ব প্লাটফর্ম প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রকল্পে আগামী বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে তারা।
বাংলাদেশি গার্মেন্টস কারখানাগুলো যেন বিদেশে কোম্পানি গঠন ও পরিচালনার মাধ্যমে ব্রান্ড ডেভেলপমেন্ট ও বাজারজাতকরণসহ বিভিন্ন খরচ মেটাতে পারে, সেজন্য রপ্তানি আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশে পাঠানোর সুযোগ চেয়েছে বিজিএমইএ।
এছাড়া, রপ্তানি পণ্যের বিক্রয়মূল্য প্রত্যাবাসনের সময়সীমা জাহাজীকরণের দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত নির্ধারণ করা এবং জাহাজীকৃত পণ্যের রপ্তানি মূল্য ৫০ শতাংশ মূল্য ছাড় দেওয়ার সুবিধা চেয়েছে সংগঠনটি।
অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারের খুচরা ক্রেতাদের কাছে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানির জন্য পৃথক প্রস্তাবে বিজিএমইএ বলেছে, ২০১৮ সালে বিশ্বে অনলাইনে খুচরা পোশাক পণ্য বিক্রি হয়েছে ৫৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগামী দুই বছরের মধ্যে ৮৭২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে অনলাইনে খুচরা তৈরি পোশাক বিক্রি করে খুব সহজেই বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্ট কারখানাগুলো নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারবে। অনলাইন বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং (ওইএম) থেকে অরিজিনাল ব্রান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং (ওবিএম) এ রূপান্তরিত হতে পারবে বাংলাদেশ।
অনলাইন প্লাটফর্মে বিক্রির জন্য রপ্তানিকৃত পণ্যের রপ্তানি মূল্যের ওপর ৫%, নিজস্ব ডিজাইন ও ব্রান্ডের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১০% এবং যারা নিজস্ব ডিজাইন ও ব্রান্ড পণ্য তৈরিতে দেশজ পণ্য- জামদানি, মসলিন, তাঁত ইত্যাদি ব্যবহার করবে, তাদের রপ্তানি মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা চেয়েছেন রুবানা হক।
সার্কুলার ইকোনমি
রুবানা হক বলেছেন, বিশ্বব্যাপী সার্কুলার ইকোনমি বা সার্কুলার ফ্যাশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মূলত, একটি পণ্য ব্যবহারের পর তা বর্জ্য হিসেবে ফেলে না দিয়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা বা তা থেকে শিল্পের কাঁচামাল তৈরির মাধ্যমে একটি ক্লোস লুপ তৈরি করাই হচ্ছে সার্কুলার ইকোনমি মডেল।
বিজিএমই এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর পোশাকখাত থেকে প্রায় চার লাখ টন টেক্সটাইল বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার ৫% বাংলাদেশে রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার হয় এবং ৬০% রপ্তানি হয়। বাকিটা প্রকৃতিতে ফেলে দেওয়া হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৮৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের টেক্সটাইল বর্জ্য রপ্তানি করে, যা আমদানিকারক দেশগুলো রিসাইকেল করে ব্যবহার করছে। পরিকল্পিত রিসাইক্লিং শিল্প গঠনের মাধ্যমে এসব বর্জ্য মূল্যবান সম্পদে পরিণত হতে পারে বলে মনে করছে বিজিএমইএ।
রিসাইক্লিং শিল্পের বিকাশের জন্য সার্কুলার ফ্যাশন পণ্য তৈরি ও রপ্তানিতে ১০ বছর ধরে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রস্তাব করে এ ধরণের শিল্প স্থাপনে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১০% ভর্তুকি দেওয়া ও আমদানি শুল্ক শতভাগ মওকুফ সুবিধা চেয়েছে বিজিএমইএ। এ ধরণের শিল্প স্থাপনে সর্বোচ্চ ৫-৬% সুদে ১০ বছর মেয়াদে মোট বিনিয়োগের ৮০% পর্যন্ত ঋণের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
দেশের শিল্প ও রপ্তানিখাত বহুমুখীকরণে তৈরি পোশাকখাত বিশেষ সহযোগী ভূমিকা পালন করতে পারে উল্লেখ করে বিজিএমইএ'র বাজেট প্রস্তাবে বিভিন্নখাতে উৎপাদিত পণ্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রপ্তানির বিপরীতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নতুনখাতে শিল্প কারখানা স্থাপনে ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি মূল্যে ১০% ভর্তুকি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এতে।
ডিজিটাল পেমেন্টে ২% করছাড়ের প্রস্তাব
বিকাশ, রকেটসহ ডিজিটাল মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি দিতে কারখানাগুলোকে উৎসাহিত করতে করপোরেট করে ২% ছাড় চেয়েছে বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলেছে, কোভিড পরিস্থিতিতে সরকার গঠিত প্রণোদনা থেকে শ্রমিকদের মজুরি ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে সরাসরি পরিশোধ করার পর বেশিরভাগ কারখানা আগের মতো আবারও প্রথাগত ক্যাশভিত্তিক মজুরি ব্যবস্থাপনায় ফিরে গেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে বেতন-ভাতা দিতে গেলে কিছু খরচও রয়েছে। এ সকল বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে যেসব কারখানা ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে, তাদের জন্য বিশেষ এই আর্থিক সুবিধা চেয়েছে বিজিএমইএ।
৫০০ কোটি টাকার এসএমই এ্যাসিসটেন্স ফান্ডের প্রস্তাব
পোশাক শিল্পের ভ্যালু চেইনে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সহায়ক শিল্প ও কাঁচামাল উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একটি ক্লাস্টারভিত্তিক অভিন্ন সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে আগামী বাজেটে এসএমই অ্যাসিসটেন্স ফান্ড গঠনে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে বিজিএমইএ বলেছে, এসব কারখানা স্থাপনে ব্যাংক ঋণের সুদহার হতে হবে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ। যেসব এসএমই প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে, তাদের করপোরেট কর হার ৫% নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছে বিজিএমইএ। এসব কারখানা যাতে সহজেই ভাচুর্য়াল মার্কেটে সংযুক্ত হতে পারে, সেজন্য টেকনোলজি, লজিস্টিকস ও বৈদেশিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নীতি ও আর্থিক সহায়তা চেয়েছে সংগঠনটি।
এছাড়া, কারখানার নিরাপত্তা মান যাচাই ও সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনায় গঠিত আরএমজি সাসটেইন্যাবিলিটি কাউন্সিল পরিচালনায় বছরে ৫০ কোটি টাকা খরচ হয় জানিয়ে আগামী বাজেটে এ খাতে ২০ কোটি টাকা অনুদান চেয়েছে বিজিএমইএ।
গবেষণায় ১০০% ভর্তুকির প্রস্তাব
বিজিএমইএ বলছে, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্য সংযোজন সক্ষমতা বাড়াতে হবে। না হলে মজুরিসহ অন্যান্য খরচের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির ফলে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলোর প্রতিযোগিতামূলক ব্যয় থাকবে না। সেজন্য শিল্পে গবেষণা, উন্নয়ন ও নিজস্ব ডিজাইন উদ্ভাবনের মত বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এর মাধ্যমে রপ্তানিতে অধিক মূল্য সংযোজন সম্ভব হবে এবং উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরির দিকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সুগম হবে।
পোশাক কারখানায় পণ্য সংক্রান্ত নিজস্ব গবেষণা, উন্নয়ন, ট্রায়াল প্রডাকশন সংক্রান্ত বার্ষিক প্রকৃত ব্যয়ের শতভাগ নগদ সহায়তা চেয়েছে বিজিএমইএ। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে- দেশি-বিদেশি পরিদর্শক বা বিশেষজ্ঞ নিয়োগ, ফোরকাস্টিং, এনালাইটিক্স ডিজাইন টুল সংক্রান্ত ওয়েবসাইট সাবস্ক্রিপশন ফি, বিদেশ থেকে ডিজাইন ইন্সপিরেশন ক্রয়, আনুষঙ্গিক ট্র্যাভেলিং ইত্যাদি।
শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে ২১৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন ও আয়রন ট্যাবলেট সরবরাহ, তাদের বাসস্থান, যাতায়াত ও শিক্ষাখাতে সহায়তা দিতে আগামী বাজেটে সামাজিক সুরক্ষাখাতে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ চেয়েছে বিজিএমইএ। শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রফেশনাল কাউন্সেলিং বাবদ বছরে কমপক্ষে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে তারা।
মেধাবী পোশাক শ্রমিকদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে বাজেটে বিশেষ বৃত্তি স্কিম গঠনের প্রস্তাব করে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে বিজিএমইএ। এছাড়া, জোনভিত্তিক ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য ৩ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ সুদমুক্ত ব্লক একাউন্টে স্থানান্তর
করোনার কারণে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্রান্ড দেউলিয়া হয়েছে। অনেক ব্রান্ড বিভিন্ন কারণে রপ্তানি মূল্য পরিশোধ করছে না এবং ক্রয়াদেশ বাতিল করছে। এসব কারণে অনেক কারখানা ব্যাংক ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা হারিয়েছে উল্লেখ করে তাদের ঋণ সুদমুক্ত ব্লক একাউন্টে স্থানান্তর করে বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে বিজিএমইএ। সকল কারখানাকে উৎপাদন ও রপ্তানিতে ফিরিয়ে আনতে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে তা পুনঃতফসিলকরণ এবং বর্ধিত সময়ে ৫% সুদে পুনরায় ঋণ সুবিধা চেয়েছে।
কোভিড পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জের বিপরীতে দেওয়া ঋণ পরিশোধে ১৮ মাসের বদলে ৩০ মাস সময় দেওয়ার প্রস্তাবও করেছে সংগঠনটি।