২১২টি পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ বেড নিয়ে উদ্বোধন হলো দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল
রাজধানীর মহাখালীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য চালু হলো দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল 'ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল'। রবিবার বেলা ১টার দিকে হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এখন চিকিৎসার জন্য এখানে রোগীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।
হাসপাতালটি আর্ম ফোর্সেস ডিভিশনের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে। এখানে সার্বিক সহযোগিতা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
১৫০ জন চিকিৎসক ইতিমধ্যে হাসপাতালে যোগদান করেছেন, নার্স যোগদান করেছেন ২০০ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন ৩০০ জনের মতো। এছাড়া এই হাসপাতালে সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর প্রায় ১৫০ জন চিকিৎসক ও বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ কর্মীরা সহযোগিতা করছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের (ডিএনসিসি) মহাখালী কাঁচাবাজারের ছয় তলা বিশিষ্ট এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা ভবনে এই হাসপাতাল চালু করা হলো। এতদিন মার্কেটটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখন করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হলেও পৃথকভাবে ওই সেবা কার্যক্রমগুলো চলবে।
হাসপাতালটি উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'আজ এক বিশেষ খুশির দিন। গোটা বিশ্বের ন্যায় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আমাদের দেশেও হানা দিয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা দিন দিন ভীতিকর হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঢাকার সব হাসপাতালের আইসিইউ বেড পূর্ণ হয়ে গেছে। প্রতিদিনই আইসিইউ চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ রকম একটি কঠিন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জরুরি ভিত্তিতে ডিএনসিসির এই মার্কেটটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে উদ্বোধন করা হলো।'
'এই হাসপাতালে কোভিড রোগীদের জন্য মোট বেড সংখ্যা রয়েছে ১০০০টি।এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ বেড আছে ২১২টি, এইচডিইউ বেড আছে ২৫০টি, কোভিড আইসোলেটেড রুম আছে ৪৩৮টি। এখানে এমার্জেন্সি বেড আছে ৫০টি, যার ৩০টি পুরুষ ও ২০টি মহিলা রোগীর জন্য। এর পাশাপাশি এখানে আরটি পিসিআর ল্যাব, প্যাথলজি ল্যাব, রেডিও থেরাপি সেন্টার, এক্সরে সুবিধাসহ অন্যান্য নানাবিধ সুবিধাদি রয়েছে,' বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
উদ্বোধনকালে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, এফসিপিএস ডিরেক্টরেট জেনারেল মেডিকেল সার্ভিসেস মেজর জেনারেল মো. মাহাবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঞ্জুর আহমেদ, এইচইডি চিফ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বশির এবং ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এটিএম নাসির উদ্দিন।
এর আগে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, 'এ হাসপাতালে ১২শ'র বেশি শয্যা স্থাপনের সক্ষমতা আছে। তবে রোববার (আজ) থেকে আংশিকভাবে ২৫০ শয্যা চালু করা হবে। এর মধ্যে ৫০টি আইসিইউ, ৫০টি শয্যা জরুরি রোগীদের জন্য এবং ১৫০টি সাধারণ শয্যা। সাধারণ শয্যা হলো কভিড আইসোলেশন রুম। এই রুমগুলোতে আপাতত একজন করে রোগী রাখার পরিকল্পনা রয়েছে'।
এ কে এম নাসির উদ্দিন আরও বলেন, 'আগামী সাত দিনের মধ্যে ৫০০ শয্যা চালু করতে পারব। বাকি শয্যাগুলো আশা করছি এ মাসের মধ্যেই চালু করতে পারব।'