ব্যাংকগুলো নীট মুনাফার ১ শতাংশ অর্থ দিয়ে নিজস্ব স্টার্ট-আপ ফান্ড গঠন করবে
উদ্যোক্তা তৈরিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫শ কোটি টাকার স্টার্ট-আপ ফান্ডের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে তাদের বাৎসরিক নীট মুনাফার ১ শতাংশ অর্থ স্থানান্তর করে নিজস্ব স্টার্ট-আপ ফান্ড গঠন করতে হবে।
গেল ২৯ মার্চ প্রকাশিত স্টার্ট-আপ ফান্ড পলিসিতে ব্যাংকগুলোকে পরিচালন মুনাফার ১ শতাংশ অর্থ স্থানান্তর করে ফান্ড গঠনের কথা বলা ছিল।
সোমবার (২৭ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট নতুন এই পরিবর্তন আনল।
এ সংক্রান্ত সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো ২০২১ সাল থেকে পরবর্তী ৫ বছর তাদের নীট মুনাফা (নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী) হতে ১ শতাংশ অর্থ নিয়ে স্টার্ট-আপ ফান্ড গঠন করবে। এছাড়া নীতিমালার অন্যান্য অংশ বহাল থাকবে।
নীতিমালার পরিবর্তন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এতে করে ব্যাংকের উপর চাপ কিছুটা কমে গেল।
তিনি বলেন, পরিচালন মুনাফা থেকে নীট মুনাফার পরিমাণ কম হয়ে থাকে। এখন যেহেতু নীট মুনাফার এক শতাংশ অর্থ স্থানান্তর করতে হবে, তাই বাড়তি কিছু টাকা ব্যাংকের হাতে থাকবে, যা শেয়ার হোল্ডারদের মাঝে বিতরণ করা যাবে।
গেল ২৯ মার্চের নীতিমালায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের জন্য ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল এবং নিজস্ব তহবিল উভয় থেকেই ঋণ দিতে পারবে। তবে আগামী বছর থেকে ব্যাংকগুলো আগে নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ দিবে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল থেকে ঋণ দিবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকা এবং ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল দিয়ে গঠন করা উভয় স্টার্ট-আপ ফান্ড থেকে ২১ থেকে ৪৫ বছর বয়স্ক উদ্ভাবনী উদ্যোক্তারাই একটি উদ্যোগ বা প্রকল্পের জন্য সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবেন। তহবিলের ১০% ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
সরল সুদে বাৎসরিক ঋণের সুদহার হবে ৪ শতাংশ। ঋণের মেয়াদ ৫ বছর। প্রতি তিন মাস বা ছয় মাত্র অন্তর ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। ঋণ পরিশোধে গ্রেস পিরিয়ড সর্বোচ্চ ১ বছর।
ঋণ পাওয়ার উদ্দেশ্যে কোন উদ্যোক্তা ব্যাংকের নিকট কোন আইডিয়া শেয়ার করলে তার বিপরীতে অর্থায়ন করা হোক বা না হোক ওই আইডিয়া ব্যাংক অন্য কারো কাছে প্রকাশ করতে পারবে না।
নীতিমালায় স্টার্ট-আপ এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছিল, স্টার্ট-আপ বলতে বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে নতুন পণ্য/সেবা/প্রযুক্তি/প্রক্রিয়া এর উদ্ভাবন ও অগ্রগতিকে বুঝাবে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবিত সমাধানগুলো বিস্তৃতিযোগ্য, ব্যবসায়িকভাবে টেকসই, বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে হবে যা কর্মসংস্থান তৈরি ও অভ্যন্তরীণ সম্পদকে বাড়াবে।
উদ্যোক্তার প্রস্তাবিত উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন ও সৃজনশীল হতে হবে। আবেদনকারীর নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে সরকারি কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক কারিগরি শিক্ষা না থাকলে উদ্যোক্তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথাযথ বাস্তবভিত্তিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও নতুন উদ্যোগ পরিচালনার সক্ষমতা থাকতে হবে।