অক্সিজেন
পানি থেকে তোলা জ্যান্ত মাছ মাটিতে পরে কাৎরাতে কাৎরাতে যেমন মৃত্যুবরণ করে-এই মাটির উপর থেকেই অক্সিজেন গ্রহণে অসামর্থতার কারণে এবং অক্সিজেনের অভাবে মানুষকে মাছের চেয়েও অনেক করুণ এবং অমার্যাদাকর মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর মুখে অক্সিজেন মাস্ক ছিল। অক্সিজেন টিউব সাপ্লাই লাইনের সাথে সংযুক্ত ছিল। কিন্তু অক্সিজেন ট্যাঙ্কে অক্সিজেন ছিল না, লাইনে কোনো সরবরাহ ছিল না; ভারতের মহারাষ্ট্র স্বীকার করে নিয়েছে অক্সিজেনের অভাবে অন্তত ২২ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেছে।
শুধু ভারতে নয়, বাংলাদেশের মানুষ রাষ্ট্রীয় ভাষ্যে করোনার চেয়েও শক্তিশালী হলেও অক্সিজেনের অভাবে সইতে পারছে না, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার প্রমাণ নিয়েই হাজির হচ্ছে নিত্যকার গণমাধ্যম।
মাত্র ক'দিন আগে নিরুদ্দিষ্ট হয়ে যাওয়া ইন্দোনেশিয়ার সাবমেরিনের খবর জানাতে গিয়ে গণমাধ্যম বলল, সাবমেরিনে ক্রু আছে ৫৩ জন আর তাদের বেঁচে থাকার মতো ৭২ ঘণ্টার অক্সিজেন আছে। ৭২ ঘণ্টা পর ঘোষণা দিতে হয়েছে সাবমেরিনের (নানগালা ৪০২) কেউ আর জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই। ২০১৭ সালে নিরুদিষ্ট আর্জেন্টিনার সাবমেরিন আটলন্টিকে ৪৪ জন ক্রু নিয়ে নিরুদিষ্ট হয়ে যায়। এক বছর পর সাবমেরিনের হদিস মেলে। অক্সিজেনের মহাগুদাম মহাসাগরে অক্সিজেনের অভাবে কী অমানবিক মৃত্যু তাদের হয়েছে আমরা হয়ত কল্পনায় সে দৃশ্যটা আঁকতে পারব, কিন্তু শ্বাসগ্রহণ করতে না পারার যন্ত্রণা আমাদের অনুভব করার কথা নয়।
মাত্র ক'দিন আগে এভারেস্ট শৃঙ্গের কাছাকাছি ১১ জনের মৃত্যু ঘটল। মৃত্যু যেখানে ঘটেছে স্থানটি 'ডেথ জোন' নামে আগে থেকেই চিহ্নিত। কেনো এটা মৃত্যু পুরী? কারণ এখানে অক্সিজেন এতো কম যে শরীরের কোষগুলো মরতে শুরু করে। পর্বতারোহীদের বিবেচনা শক্তি দ্রুত লোপ পায়। সে অবস্থায় তাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা তীব্র শ্বাসকষ্টে মৃত্যু ঘটতে পারে।
ঘরে বাইরে, জাগরণে ঘুমে যে অবস্থায় আমরা থাকি না কেনো বাতাস যে আমাদের সারাক্ষণ বেষ্টন করে রাখে, শ্বাস প্রশাসের সঙ্কট না পড়লে তা কখনো আমাদের মনেও হয় না। বাতাসে ২১ ভাগ অক্সিজেন ৭৮ ভাগ নাইট্রোজেন ১ ভাগ অন্যান্য গ্যাস। এই একুশ ভাগের সামান্য হেরফের হলেই মানুষ ও জীবের জন্য বড় ধরণের হুমকি দেখা দেয়।
অক্সিজেন জ্ঞান: কিছু সাধারণ কিছু অসাধারণ
আমাদের শৈশবের শিক্ষা: মানুষ এবং অন্য প্রাণী বাতাস ছাড়া বাঁচতে পারে না। বছর না ঘুরতেই শিক্ষাটা আরো সুনির্দিষ্ট হলো: মানুষ এবং অন্য প্রাণী অক্সিজেন ছাড়া বাঁচাতে পারে না। এটাও শেখা হলো অক্সিজেন ছাড়া আগুন জ্বলতে পারে না।
এই দু'টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দশ বছর বয়সের মধ্যে আমার মতো আরো অনেকেই সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। প্রথম পরীক্ষার জন্য দু'আঙ্গুলে নাক টিপে ঠোঁট চেপে মুখ বন্ধ করে রাখতে হয়। ৩০ সেকেন্ড পর থেকেই হাঁসফাঁস শুরু হয়ে যায়। ৪৫ সেকেন্ড পার করা প্রশিক্ষিত মানুষের জন্য সহজ হতে পারে কিন্তু অন্যদের জন্য তা প্রাণান্তকর অভিজ্ঞতা। এই পরীক্ষায় প্রমাণিত বাতাস, মানে বাতাসের অক্সিজেন টানতে না পারার কারণেই এ অবস্থা।
দ্বিতীয় পরীক্ষাটির জন্য ল্যাবরেটরির প্রয়োজন নেই। টেবিলের উপর একটি ছোট মোমবাতি বসিয়ে আগুন ধরিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর একটি স্বচ্ছ খাবার পানির গ্লাস উল্টে বাতির উপর বসিয়ে দিন। মোমের সলতে নিষ্প্রভ হতে শুরু করে এক সময় দপ করে নিভে যায়। তার মানে বাতাসে যেটুকু অক্সিজেন ছিল পুড়তে সাহায্য করে নিঃশেষ হয়ে গেছে। গ্লাসে ঢাকা থাকার কারণে বাইরে থেকে অক্সিজেন সরবারহ বন্ধ। সুতরাং নেভা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
অক্সিজেনের প্রতীক 'O' আর পারমানবিক সংখ্যা ৮; এক পরমাণু অক্সিজেনর ওজন ১৬ পরমানু হাইড্রোজেনের ওজনের সমান। আমরা যে বাতাস গ্রহণ করি তাতে অক্সিজেন আছে, যে খাবার খাই তাতে অক্সিজেন আছে, যে পানি পান করি তাতেও অক্সিজেন আছে।
১.শ্বসন পক্রিয়া (রেসপিরেশন) জীবের যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন, উদ্ভিদেরও একই প্রয়োজন।
* অক্সিজেন বর্ণহীন গন্ধহীন স্বাদহীন একটি গ্যাস।
* তরল এবং কঠিন অক্সিজেন পান্ডুর নীল রঙের।
* তরল ও কঠিন অক্সিজেনে লাল গোলাপি কমলা এবং কালচে রং ও দেখা যায়; এমনকি কঠিন অক্সিজেন ধাতব পাতের মতোও হয়ে থাকে।
* অক্সিজেন অধাতব পদার্থ।
* অক্সিজেন গ্যাসের দুটি ধারণ: দুইযোজী অক্সিজেন এবং তিন যোজী বা ওজন।
* অক্সিজেন নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে।
* অক্সিজেন প্যারাম্যাগনেটিক, অর্থাৎ চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রতি এর দুর্বল আর্কষণ রয়েছে।
* মানুষের শরীরের দুই তৃতীয়াংশ ভরই অক্সিজেন; অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন মিলেই পানি। শরীরে সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য মৌল হচ্ছে অক্সিজেন, যদিও হাইড্রোজেন পরামাণুর সংখ্যা অনেক বেশি, পারমানবিক ওজন কম হবার কারণে (অক্সিজেনের ষোলো ভাগের একভাগ) ভরের কম অংশ হাইড্রোজেন। প্রাপ্তবয়স্ক মানব দেহের ৬০ ভাগই পানি। মস্তিষ্ক ও হৎপিন্ডের ৭৩ ভাগ পানি। ফুসফুসের ৮৩ ভাগ পানি, ত্বকের ৬৪ ভাগ, বৃক্কের ৭৯ ভাগ এবং এমনকি হাড়ের ৩০ ভাগই পানি। আর মানুষের রক্তের ৯০ ভাগ পানি।
* উজ্জ্বল লাল, হলদে সবুজ রঙের জন্য দায়ী উদ্দীপিত অক্সিজেন।
* ১৯৬১ সাল পর্যন্ত অন্য সব মৌলিক পদার্থের পারমানবিক ওজন মাপার জন্য অক্সিজেনের ওজন ছিল প্রমিত মান। অতঃপর রসায়ন বিজ্ঞানীরা কার্বনের ওজনকে প্রমিত মান বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেন। কার্বনের পারমানকি ওজন ১২; অক্সিজেনের ১৫.৯৯ যা সাধারণ ১৬ লেখা হয়।
* বাঁচতে হলে অক্সিজেন লাগবে। কিন্তু বেশি অক্সিজেন মৃত্যু ডেকে আনবে। কারণ অক্সিজেন হচ্ছে অক্সিড্যান্ট। যখন শরীর বেশি মাত্রায় অক্সিজেন গ্রহণ করবে বাড়তি অক্সিজেন ভেঙ্গে প্রতিক্রিয়াশীল ঋণাত্মক আয়ন সৃষ্টি করবে যা শরীরে আয়রন বন্ড তৈরি করবে, চর্বির কোষের আবরণ ভেঙ্গে দেবে, শরীর বিষাক্ত হয়ে উঠবে।
* মনে করা হয় মুক্ত অক্সিজেনের ৭০ ভাগ আসে সবুজ শ্যাওলা এবং স্যায়ানোব্যাকটেরিয়া থেকে। সাবির্কভাবে ৫০ ভাগ অক্সিজেন যোগান দেয় সমুদ্র।
* প্রাগৈতিহাসিক আমলে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের ঘনত্ব বেশি ছিল বলে তখনকার প্রাণী আকার বড় ছিল বলে মনে করা হয়। যেমন একালে ফড়িং ৩০০ মিলিয়ন বছর আগে পাখির মতো বড় ছিল বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
* মহাবিশ্বেও তৃতীয় সর্বাধিক পরিমান মৌল হচ্ছে অক্সিজেন। আমাদের সৌরজগতে গ্রহসমূহের কেন্দ্র সূর্যের চেয়েও পাঁচগুন বড় নক্ষত্রে অক্সিজেন মৌল তৈরি হচ্ছে। নক্ষত্রসমূহ কার্বন এবং কঠিন হিলিয়ামের মিশ্রন জ্বালায়। প্রজ্জ্বলন সহায়ক মৌল অবশ্যই অক্সিজেন।
* প্রাকৃতিক অক্সিজেনের তিনটি আইসোটোপ (একই মৌলের একই পারমানিক ওজনের একাধিক ভিন্নরূপ) ০-১৬, ০-১৭ এবং ০-১৮, তবে ০-১৬-ই ৯৯.৭৬২ ভাগ অক্সিজেন নিশ্চিত করেছে।
* একটি সজীব পাতা এক কাপ পানিতে ডুবিয়ে রৌদ্রালোকে রাখলে দেখা যাবে পাতার প্রাপ্তদেশে বুদ্বুদ সৃষ্টি হচ্ছে। এই বুদ্বদের ভেতরেই রয়েছে অক্সিজেন। তরলীকৃত বাতাস বা ডিস্টিল করে অক্সিজেন উৎপাদন করা যায় অথবা পানির মধ্য দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুত প্রবাহিত করে পানির হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের বন্ধন ভেঙ্গে অক্সিজেন তৈরি করা যায়।
* বিশুদ্ধ এক লিটার পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ৬.০৪ মিলিলিটার; সমুদ্রের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন কম, ১ লিটারে ৪.৯৫ মিলিলিটার।
* দু'টি বাদে পৃথিবীর সকল মৌলিক পদার্থ অক্সিজনের সাথে মিশে যৌগ গঠন করে; ব্যতিক্রম দুটি নোবল গ্যাস হিলিয়াম ও নিয়ম।
* প্রমিত অবস্থায় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অক্সিজেন হচ্ছে একটি গ্যাস যার গলনাঙ্ক -২১৮.৭৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং স্ফুটনাঙ্ক -১৮২.৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মেডিকেল অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়ে গেছে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস প্রকোপ পৃথিবীকে যখন কেবল গ্রাস করতে চলেছে তখনকার মেডিক্যাল অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিশ্ববাজারের আকার ছিল ১৫.৪১ বিলিয়ন ডলার। করোনার ফার্স্ট ওয়েভ ডিঙ্গিয়ে আসা পৃথিবী এখন হিসেব যে করেছে তাতে ২০২৭ সালে এই সিলিন্ডারের বাজারের আকার হবে ২৩.৬৪ বিলিয়ন ডলার। এই মুহুর্তে পৃথিবীর করোনা রোগীর সংখ্যা ২ কোটির কাছাকাছি। এই সংখ্যাটি উদ্বেগের কারণ। এই বিশ্বব্যাধি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বলে দিচ্ছে এমন বিপুল পরিমাণ সিলিন্ডার রাখার অবকাঠামোই অনেক স্থানেই নেই।
প্রতিদিন ৪৫০০০ টন অক্সিজেন
দক্ষিণ আফ্রিকার সেকুন্ডাতে রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম অক্সিজেন প্লান্টগুলোর একটি। বাতাস থেকে অক্সিজেন বিচ্ছিন্ন করে ফরাসি মালিকানাধীন এয়ার লিকুইড কোম্পানি ট্যাঙ্কারে তা বাজারজাত করে থাকে। এ কারখানার এয়ার কম্প্রেসর মোটর ৬৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন। কারখানায় ১৬ টি এয়ার সেপারেশন ইউনিট কাজ করে।
দুই পরমাণু সমন্বয়ে গঠিত অক্সিজেন ডাইঅক্সিডেন বা ডাইএটমিক অক্সিজেন পৃথিবী পৃষ্ঠের প্রায় সকল কিছুতেই বিভিন্ন মাত্রায় লুকিয়ে আছে। অগ্নিপ্রজ্জলনে ও বায়ুশ্বসনে অবমুক্ত অক্সিজেন সালোকসংশ্লেষণে প্রক্রিয়ায় ফিরে আসে। শরীরের প্রেটিন, নিউক্লিক এসিড, কার্বোহাইড্রেট স্নেহ এবং অজৈব দাঁত হাড় ইত্যাদি অক্সিজেন ধারণ করে।
শ্বসন ও দহন সহায়ক বাদে বিশ্বজুড়ে অক্সিজেনের কিছু সাধারণ ব্যবহার রয়েছে। স্টিল প্লাস্টিক ট্রেক্সটাইল উৎপাদন, ব্র্যাজিং (পিতল ও দস্তা মিশ্রিত কারণ), ওয়েল্ডিং, স্টিল ও অন্যান্য ধাতব পদার্থ কাটা, রকেট পরিচালনা অক্সিজেন থেরাপি, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম, উড়োজাহাজ, সাবমেরিন মহাশূণ্য ভ্রমণ, ডাইভিং পর্বতারোহন প্রভৃতিতে অক্সিজেনই মূখ্য সহায়ক।
চিকিৎসা খাতের একটি অবিভাজ্য উপাদান অক্সিজেন। ঔষধের অন্যতম পরিপূরক অক্সিজেন। অক্সিজেন প্রযুক্ত হলে কেবল রক্তের অক্সিজেন মাত্রা বাড়ে তাই নয়। শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ যেমন ফুসফুসে রক্তপ্রবাহ কমার প্রবণতাকে প্রতিহত করে। হৃৎযন্ত্র ও ধমণীর সমস্যাসহ ফুসফুসের সমস্যাতে অক্সিজেন প্রয়োগ অনিবার্য হয়ে উঠে। মরণাপন্ন রোগীর জন্য যে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম তার প্রধান উপদানই উপযুক্ত পরিমাণ অক্সিজেন সরবারহ।
করোনাকালো অক্সিজেন আলোচনায় এসেছে অক্সিজেনের প্রাকৃতিক উৎপাদন কমে গেছে এমন কোনো কারণে নয়; বরং মানুষের অবহেলা দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি হয়নি, অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদাভিত্তিক সরবরাহ সম্ভব হয়নি- এর পেছনে মূল কারণ লুটপাট ও দুর্নীতি। দিল্লিতে অক্সিজেন সংকট এবং মানুষের নির্মম মৃত্যুর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমনের পর গৃহীত কর্মসূচি অনুযায়ী এতোদিন ভারতে ২৫৬টি পূর্ণ উৎপাদনক্ষম অক্সিজেন প্লান্ট থাকার কথা। কিন্তু প্রস্তুত হয়েছে জোড়াতালির ৫টি মাত্র প্লান্ট। বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য খাতের আর আক্সিজেন খাতের অবস্থা একই রকম।
নতুন একটি উন্নয়ন সূচক উদ্ভাবিত হতে যাচ্ছে: অসুস্থ নাগরিককে রাষ্ট্রের অক্সিজেন সরবরাহ ক্ষমতা।