কোভিডের আরেকটি জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি গবেষকদের
কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ঠেকাতে পারে এমন একটি তুলনামূলক সস্তা স্টেরয়েড ওষুধ আবিষ্কারের ঠিক এক বছর পরেই বিজ্ঞানীরা জীবনরক্ষাকারী আরো একটি ওষুধ নিয়ে হাজির হয়েছেন।
তবে নতুন আবিষ্কৃত এ ওষুধটি ব্যয়বহুল। এটি ভাইরাসের প্রতি শরীরের প্রদাহজনক সাড়াদানকে আর্দ্র করবে না বরং অ্যান্টিবডিযুক্ত একটি শক্তিশালী ইনট্রাভেনাস তরল ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।
ওষুধটির রিকভারি ট্রায়ালে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ দ্বারা গুরুতর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছেন, এমন প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ব্যক্তিকে সারিয়ে তুলতে সক্ষম এই ওষুধ।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চিকিৎসা নেয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৬ জনের প্রাণ বাঁচাবে এটি।
যুগান্তকারী চিকিৎসা
শুধুমাত্র যারা এখন পর্যন্ত কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিজ থেকে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারেননি, তাদেরকেই ১০০০-২০০০ পাউন্ড মূল্যের এই নতুন ওষুধের চিকিৎসাটি দেয়া হবে।
৩৭ বছর বয়সী কিম্বারলে ফিদারস্টোন ট্রায়ালের সময় এই চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, 'আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি যে আমি যখন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই, তখন এই ট্রায়াল চলছিল এবং আমি এই যুগান্তকারী চিকিৎসা নিতে পেরেছি। আমি ট্রায়ালে অংশ নেয়ায় এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে বলেও আমি খুশি।'
রিজেনরোন এর তৈরি এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট ভাইরাসকে দেহকোষকে আক্রমণ ও এর পুনরাবৃত্তি করা থেকে বিরত রাখে।
যুক্তরাজ্যের প্রায় ১০ হাজার রোগীকে নিয়ে করা এই ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা যায় এটি মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়, হাসপাতালে থাকার সময় কমায় এবং নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য ভেন্টিলেটরের প্রয়োজনও কমিয়ে আনে।
ট্রায়ালের প্রধান তদন্তকারীর একজন স্যার মার্টিন ল্যানড্রে জানান, দুটি ড্রাগের সংমিশ্রণে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে।
বড় রকম অনিশ্চয়তা
অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি স্টেরয়েড ড্রাগ ডেক্সামেথাসোনের পাশাপাশি এই নতুন ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে। ডেক্সামেথাসোন গুরুতর কোভিড রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেয়।
অপর প্রধান তদন্তকারী স্যার পিটার হরবি বলেন, অ্যান্টিবডি থেরাপিগুলো দেয়াই সঠিক উপায় কিনা তা নিয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা থেকে গেছে। কিছু গবেষণায় এর কোন উপকারিতা পাওয়া যায়নি।
কিন্তু কোভিড-১৯ থেকে সেরা ওঠার জন্য রিকভারি ট্রায়ালে যে অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করা হয় তাতে ল্যাবে তৈরি নির্দিষ্ট দুটি অ্যান্টিবডির বড় মাত্রার ডোজ ব্যবহৃত হয় এবং এগুলো ভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে বেশ ভালো কাজ করে।