এক সপ্তাহে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অর্থ হারালেন ভারতীয় ধনকুবের
বিশ্বের সেরা ধনীদের কাতারে নিজ অবস্থান এগিয়ে নেওয়া হলো না ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির। পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত তার ছয়টি প্রতিষ্ঠানে অফশোর বিনিয়োগ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। ফলে বিপুল অংকের সম্পদমূল্য হারিয়েছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহে ভারতের এ দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির শিকার হন তা বিশ্বের অন্য সবার চাইতে বেশি। এসময় তার মালিকানাধীন শেয়ার তথা সম্পদমূল্য ৯০০ কোটি ডলার কমে ৬৭.৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে বলে জানা গেছে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স সূত্রে।
পুঁজিবাজারে বুধবারের কার্যদিবসে আদানি গ্রুপের নিবন্ধিত সব কটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের সর্বশেষ মূল্য (ক্লোজিং প্রাইস) অনুসারেই এ হিসাব করেছে ব্লুমবার্গ।
অথচ মাত্র কয়েকদিন আগেই এশিয়ার সেরা ধনী মুকেশ আম্বানির সঙ্গে তার সম্পদের ব্যবধান কমে আসছিল। কিন্তু, সেই অবস্থার উল্টো দশাই এখন। আজ বৃহস্পতিবারের কার্যদিবসে (১৭ জুন) আদানি গ্রুপের শেয়ার মূল্য আরও কমেছে।
এর আগে ভারতের প্রথম সাড়ির অর্থনৈতিক গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, ভারতীয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণের একটি সংস্থা- মরিশাস ভিত্তিক তিনটি তহবিলের বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট 'ফ্রিজ' করেছে। আলবুলা ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড, ক্রেস্টা ফান্ড এবং এপিএমএস ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড নামের এসব তহবিলের প্রকৃত মালিকানা নিয়ে অস্পষ্টতা থাকায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টগুলো থেকে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৬০০ কোটি ডলারের শেয়ার কেনা হয়েছিল।
সঙ্গেসঙ্গেই এ সংবাদের কড়া প্রতিবাদ জানায় আদানি গ্রুপ। প্রতিবেদনটিকে 'প্রচণ্ড ভুলে ভরা' এবং 'বিনিয়োগকারীদের ভুলপথে চালিত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছেকৃত ভাবে প্রকাশিত' বলেও দাবি করা হয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে। কিন্তু, ততোক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়, অফশোর তহবিলগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয়ে অনেক বিনিয়োগকারীই আদানি গ্রুপের শেয়ার বেচা শুরু করেন।
আদানি গ্রুপের দাবির বিপরীতে মার্কিন গণমাধ্যম ও বাণিজ্যিক তথ্য বিশ্লেষক ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্স বলেছে, মরিশাস ভিত্তিক তহবিলগুলোর মোট সম্পদের ৯০ শতাংশই হচ্ছে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার।
এব্যাপারে মুম্বাই ভিত্তিক বিশ্লেষক হেমিন্দ্রা হাজারি বলেছেন, "অফশোর তহবিলগুলোর মালিকদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট তথ্য থাকা দরকার। আদানি গ্রুপের শেয়ারের সর্বশেষ মালিক কারা- তাহলেই বেড়িয়ে আসবে।"
এব্যাপারে ব্লুমবার্গকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত ব্যাখ্যার বাইরে কিছু বলতে রাজি হননি আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্র। গত ১৪ জুনের ওই ব্যাখ্যায় বলা হয়, "গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বিদেশি তহবিলগুলো আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডে বিনিয়োগ করছে। তাই বাজারে প্রচলিত গুজবে কান না দিতে আমরা আমাদের সকল অংশীদারদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি।"
- সূত্র: ব্লুমবার্গ