সীমিত লকডাউনে চট্টগ্রামের পথে পথে ভোগান্তি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত তিনদিনের সীমিত লকডাউনের প্রথম দিনে চট্টগ্রামের পথে পথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষদের। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে অফিসগামী যাত্রীদের ভিড়। সড়কে রিকশা ছাড়া কোনো বাহন নেই। যে রিকশাগুলো চলছে সেগুলোর ভাড়াও বেশি।
সোমবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে গণপরিবহনের উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে। সড়কে গুটি কয়েক রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া তেমন কোনো যানবাহন দেখা যায়নি। সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। বন্ধ রয়েছে শপিংমল, মার্কেট, বিনোদন কেন্দ্র। তবে খোলা আছে হোটেল-রেস্তোরাঁ। বসে খাওয়ায় নিশেধ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না।
সকাল ৯ টার দিকে নগরের সিএন্ডবি শিল্প এলাকার বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও পায়ে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কারখানা কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পরিবহন সরবরাহের কথা থাকলেও অনেক পোশাক শ্রমিকদের জন্য সে ব্যবস্থা ছিলোনা। আবার অনেককে বাড়তি ভাড়া গুনে কারখানায় যেতে দেখা গেছে।
সকাল ১০ টায় নগরের ব্যস্ততম এলাকা বহদ্দারহাট মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ মানুষ গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। গণপরিবহন চলাচল না করার সুযোগে রিকশাওয়ালারা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে। মাঝে মাঝে দু'একটি ব্যক্তিগত পরিবহন এলেই যাত্রীরা তাতে চড়তে হুরোহুরি করছে।
নগরের চকবাজার এলাকায় জান্নাতুল নাইম নামে একজন নারী ব্যাংক কর্মকর্তা বলেছেন তিনি এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো রিকশাওয়ালাকে নিউমার্কেট যেতে রাজি করাতে পারেননি।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'প্রথম দফায় তিন দিন সরকার সীমিত ভাবে লকডাউন বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ গুলো বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছেন সিভিল প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।'
শনিবার তথ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (২৮ জুন) থেকে সীমিত পরিসরে এবং বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাত দিন সারা দেশে 'সর্বাত্মক লকডাউন' ঘোষণার কথা জানায়।
এদিকে চলমান লকডাউনের মাঝেই চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি অব্যহত আছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৩২৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২২৭ জন চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দা, বাকি ১০০ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এ সময়ের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট ৫৭ হাজার ৯৯৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হয়েছেন; মারা গেছেন ৬৮৮ নারী-পুরুষ।