উন্নয়নশীল এশীয় দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আভাস কমিয়ে ৭.২ শতাংশ করেছে এডিবি
এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর সার্বিক অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে এর আগে যে অনুমান করা হয়েছিল, চলতি বছরের প্রকৃত অর্জন তার চাইতে সামান্য কম হবে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১০ সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণেই পূর্ব প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
চীন ও ভারতসহ সদস্য ৪৬টি সদস্য দেশকে উন্নয়নশীল এশিয়া (ডেভেলপিং এশিয়া) উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার (২০ জুলাই) এডিবি জানায়, এসব দেশের সার্বিক প্রবৃদ্ধি এপ্রিলে প্রকাশিত পূর্বাভাস প্রতিবেদনের ৭.৩ শতাংশ থেকে কমে ৭.২ শতাংশে নেমে আসবে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) শীর্ষক এ প্রতিবেদনে এশীয় অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির প্রাক্কালন দেয় ফিলিপিয়ানের ম্যানিলা ভিত্তিক দাতা সংস্থাটি।
তবে এডিবি সদস্য দেশগুলোর মোট অর্থনীতি এপ্রিলে দেওয়া আভাসের ৫.৩ শতাংশের তুলনায় বেড়ে আগামী বছর ৫.৪ শতাংশ হবে এমন কথাও জানানো হয়েছে সর্বশেষ প্রতিবেদনে।
দাতা সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসাইয়ুকি সাওয়াদা বলেন, "মহামারি থেকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকলেও করোনাভাইরাসের নিত্যনতুন ধরনের উদয় ও প্রাদুর্ভাবের কারণে উত্তরনের এ পথটিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। টিকা নিয়ে বৈষম্যও এর জন্য দায়ী।"
সাম্প্রতিক এডিও প্রতিবেদনের সম্পূরক অংশে চলতি বছর চীনের ৮.১ প্রবৃদ্ধির আভাসে পরিবর্তন করা হয়নি। আগামী বছর দেশটি ৫.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।
তবে ভারতের জন্য দেওয়া আভাস সংশোধন করে চলতি বছর দেশটি ১০ শতাংশ এবং আগামী বছর সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি লাভ করবে বলে জানানো হয়। এপ্রিলের প্রাক্কালনে চলতি ও আগামী বছর যথাক্রমে ১১ ও ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আভাস দেওয়া হয়েছিল।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জন্য পূর্বাভাসে রদবদল করেছে এডিবি। এ অঞ্চলের ইন্দোনেশিয়া চলতি বছর পূর্বানুমানের ৪.৫ শতাংশের কম ৪.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ থেকে কমে ২ শতাংশ হবে থাইল্যান্ডে। মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ থেকে কমে ৫.৫ শতাংশ হবে। অন্যদিকে, ৬.৭ শতাংশ থেকে কমে ৫.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে ভিয়েতনামের।
একইসঙ্গে, টিকাকরণ ও সংক্রমণ রোধে সফল সিঙ্গাপুরের প্রবৃদ্ধি এপ্রিলে অনুমিত ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬.৩ শতাংশ হওয়ার কথা জানিয়েছে এডিবি। ফিলিপাইনের আভাস অপরিবর্তিত সাড়ে ৪ শতাংশে রাখা হয়েছে।
২০২২ সালের জন্য এডিবি বেশিরভাগ দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অর্থনীতির বিকাশের পূর্বাভাস বজায় রেখেছে: ইন্দোনেশিয়ার জন্য ৫.০ শতাংশ, মালয়েশিয়ার জন্য ৫.৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের জন্য ৫.৫ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের জন্য ৪.১ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ৭ শতাংশের অনুমান করা হচ্ছে।
অবশ্য আগামী বছরের জন্য থাইল্যান্ডের পূর্বাভাস বাড়িয়ে সাড়ে ৪ শতাংশ থেকে ৪.৯ শতাংশ করা হয়েছে।
এব্যাপারে এডিবি অর্থনীতিবিদ সাওয়াদা বলেন, "সংক্রমণ রোধ ও টিকাকরণের উদ্যোগের পাশাপাশি বাণিজ্য, উৎপাদন ও পর্যটনের মতো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুনঃশক্তিসঞ্চারের কৌশলগত উদ্যোগ একটি সবুজ, সুষম ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করার মূল চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করবে।"