শেষ বিকেলে গরু নিয়ে ব্যাপারীদের কান্না
সংক্রমণ এড়াতে এবার অনলাইন ও খামার থেকেই বেশিরভাগ ক্রেতারা নিজেদের কোরবানির পশু ক্রয় করেছেন। এতে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে ও পশু বিক্রি করতে না পেরে চট্টগ্রামের কোরবানির হাটগুলোতে পশু ব্যবসায়ীরা অনেকেই এখন ভেঙে পড়েছেন।
প্রাণী সম্পদ বিভাগের হিসেবে, চট্টগ্রামে এবারের বাজারে সম্ভাব্য কোরবানি পশুর চাহিদা ছিলো ৮ লাখ ৯ হাজার। যার বিপরীতে স্থানীয় খামারিরা যোগান দিয়েছেন ৭ লাখ ৫৬ হাজার পশু। ঘাটতি ছিল ৫২ হাজার পশু। কিন্তু দেশের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গ থেকে ট্রাকে ট্রাকে গরু আসে চট্টগ্রামের হাটগুলোতে। যা ঘাটতির তুলনায় চারগুণের বেশি। ফলে শেষ দিনে ব্যাপারীরা পশুর কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ার পাশাপাশি পশু বিক্রি করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
নাটোর থেকে চারজনের সাথে ২৬টি গরু নিয়ে চট্টগ্রামের বিবিরহাট বাজারে এসেছিলেন মনসুর আলী। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৮টি গরু বিক্রি করতে পারলেও বাকি ১৮টি গরু বিক্রি করতে পারেননি তারা।
চট্টগ্রামের হাটগুলোতে শত শত গরু নিয়ে যখন বিক্রেতারা জন্য অধীর আগ্রহে ক্রেতাদের অপেক্ষায় ছিলেন, সেই সময় অনলাইনে কেবল চট্টগ্রামেই বিক্রি হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ গরু। এছাড়াও বিভিন্ন হাটে গরু বেচাকেনায় প্রভাব ফেলছে বিকল্প গরু বিক্রির স্থানগুলো।
মঙ্গলবার বিকেলে মুরাদপুর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে প্রায় শতাধিক গরু নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের।
চন্দনাইশের আবদুল মাবুদ বলেন, "৫ টা গরু কিনে বিবিরহাট বাজারে এসেছিলাম কিছু লাভের আশায়। কিন্তু সেখানে বেচাবিক্রি নেই, তাই গরু নিয়ে রাস্তায় চলে এসেছি। একটা পান খাবো সে আয়ও হয়নি।"
বিবিরহাট পশু বাজারের ইজারাদার আরিফ চৌধুরী বলেন, "বিরাট অংকের টাকা দিয়ে হাট ইজারা নিয়েছি। কিন্তু এবছর মৌসুমি বিক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় কম দামেই গরু ছেড়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। এতে আমরা ভালো হাসিল পায়নি।"
চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আশরাফুল আলম খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "অন্যবারের তুলনায় এবার হাটের বাইরে পশু বিক্রির পরিমাণ বেশি ছিলো। বিশেষ করে প্রায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি মৌসুমি ব্যবসায়ী এবার বাজারে ঢুকে পড়ায় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।"