লকডাউনে পেছাচ্ছে চাঞ্চল্যকর সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ
নির্ধারিত দিনে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে না।
লকডাউনের কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পূর্ব নির্ধারিত ধার্য দিনে সাক্ষ্য গ্রহণ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, গত ২৭ জুন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল সকল আসামির উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করে ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই একটানা ৩ দিন বাদীসহ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্বাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত হয়েছে। পরবর্তী দিন ধার্য করে এটি সম্পন্ন করা হবে।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি এবং মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব-১৫। হত্যাকান্ডের পর চার মাসের বেশি সময় পর তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত ও ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক থাকা ১৫ আসামি হলেন, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
এদিকে, মামলাটির স্বাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য দিনের একদিন আগে ২৫ জুলাই কক্সবাজার এসেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদ ও র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি র্যাব) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
রোববার (২৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পৃথক হেলিকপ্টার যোগে তারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান তাদেরকে স্বাগত জানান।
এদিন, পুলিশ প্রধান ড. মোঃ বেনজীর আহমেদ জেলার বিভিন্ন পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন, পুলিশ অফিসার মেসে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কনফারেন্সে মিলিত হন।
আইজিপির আজ (২৬ জুলাই) উখিয়া এপিবিএন পুলিশ ক্যাম্প এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। পরে ২৭ জুলাই তিনি সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে হেলিকপ্টারে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।