বানরের জন্য অবাক ভালোবাসা
রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রেই অবস্থিত বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু প্রয়াত শ্রীমৎ বনভন্তের স্মৃতিধন্য এবং চাকমা রাজ পরিবারের প্রতিষ্ঠা করা 'রাজ বন বিহার'। এখানেই মমি করে রাখা হয়েছে বনভন্তেকে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র এই বিহারটির নান্দনিক নির্মাণ শৈলির পাশাপাশি একটি বিশেষ কারণে এটি দর্শনার্থীদের মন কাড়ে।
সকাল বিকাল,সারাক্ষণই কয়েক শত বিভিন্ন বয়সী বানর চড়ে বেড়ায় এখানে। বানরগুলো পুন্যার্থীদের আনা খাবার খেয়ে বৌদ্ধ সন্যাসীদের সঙ্গেই নিরুপদ্রব জীবনযাপন করে এখানে। শুধু তাই নয়, বিহারে আসা পুন্যার্থী কিংবা পর্যটকদের সঙ্গে দুষ্টুমিতেও মেতে থাকা এই বানরেরা।
কিন্তু কোভিড মহামারিতে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে যখন বিহারেও পুন্যার্থীদের আগমন কমে গেছে, তখন সঙ্গত কারণেই কমেছে বানরগুলোর খাবারের সংস্থান। বেশ কিছুদিন ধরেই খাবারের জন্য বানরগুলোর অস্থিরতা চোখে পড়ে স্থানীয়দের। আর তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার বানরগুলোর জন্য খাবার নিয়ে হাজির হন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এ সময়ে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: মামুন, রাজ বনবিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমীয় খীসা । জেলা প্রশাসকের দেয়া খাবারের মধ্যে ছিলো মূলত মিষ্টি কুমড়া ও মটর, যা এই বানরদের প্রিয় খাবার।
রাজবন বিহার কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমীয় খীসা বলেন, জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই আমরা। জেলা প্রশাসক আমাদের বানরগুলোর খাদ্যের জন্য আবেদন করতে বলেছে। আমার দ্রুততম সময়ে আবেদন করবো। এভাবে বানরগুলোকে বাঁচাতে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। রাজবন বিহারে প্রায় পাঁচ শতাধিক বানর আছে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বিহার কমিটিকে বলেছি একটি লিখিত আবেদন দিতে, আমরা সাধ্যমত বানরগুলোর পাশে থাকব। কারণ এই বানরগুলো এই বিহারের ঐতিহ্যের সাথেই সম্পৃক্ত হয়ে গেছে এবং রাঙামাটির প্রাকৃতিক পরিবেশকে আরও সুন্দর করেছে।'