পাকিস্তানে অবস্থান করছেন আখুনজাদা?
সাফল্যের ঘাটে এসে ঠেকেছে তালিবানের নৌকা, অথচ কান্ডারীই নেই! তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা কোথায়, তা এখনও জানে না কেউ। ছ' মাস আগে শেষবার শোনা গিয়েছে আখুনজাদার স্বর। তারপর থেকে আড়ালেই তালেবানের প্রধান। পাঁচদিন আগে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে তার 'বিশ্বস্ত' তালেবরা। অথচ নতুন সরকার গঠন করে তালেবান শাসন কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে তালেবান শীর্ষনেতারই অবস্থান প্রকাশ্যে আসেনি।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে শুক্রবার জানানো হয়েছে, আখুনজাদা সম্ভবত পাকিস্তানে রয়েছেন। বিদেশি গোয়েন্দারা তালেবান শীর্ষনেতার অবস্থান সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে ভারতকে। সেই সব তথ্য বিশ্লেষণ করে ভারত জেনেছে, আখুনজাদা পাক সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যদি তথ্যটি সত্যি হয়, তবে পাকিস্তান এরপর কী করবে, তা জানতে আগ্রহী ভারত।
আফগান তালেবানকে এর আগে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই পরিস্থিতিতে তালেবান শীর্ষ নেতা যদি সত্যিই পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকেন, তবে পাকিস্তান এই পরিস্থিতিকে কীভাবে সামলাবে সেটাই দেখতে চায় ভারত। এমনটি জানিয়েছেন ভারতেরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
আখুনজাদা তালেবানের শীর্ষ পদে বসেন ২০১৬ সালে। আমেরিকার ড্রোন হামলায় প্রাক্তন নেতা আখতার মনসুরের মৃত্যুর পর একটি বৈঠকে পদোন্নতি হয় তার। সেই বৈঠকও বসেছিল পাকিস্তানে।
পঞ্চাশোর্ধ আখুনজাদা অবশ্য কোনওদিন তালেব সেনাদের সেনাপতি ছিলেন না। বরং তার 'নাম-ডাক' বরাবরই আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে। শরিয়তি আইন শিরোধার্য করে চলা তালেবদের ইসলামের নানারকম ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন এই নেতা। যার বেশিরভাগই চরমপন্থী। তবে নেতা হিসেবে তার ক্ষমতাকে বরাবরই সমঝে চলেছে তালেবান। তাকে দেওয়া উপাধি 'আমির আল মুমিনিন'-এই তার প্রমাণ মেলে। এর অর্থ 'বিশ্বস্তদের নির্দেশক'।
গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশের ভবিষ্যত নেতার পদে যারা বসতে পারেন বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল, আখুনজাদা তার শীর্ষে ছিলেন। কিন্তু গত ছ'মাসের মতোই এখনও নীরবই তিনি। বরং মোল্লা বারাদার বার বার সামনে এসে তালেবানের অবস্থান, তাদের ভাবনার কথা জানিয়ে যাচ্ছেন।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা