ঋণ খেলাপি: এবার গ্রেপ্তার মাবিয়া গ্রুপের মালিক জাহাঙ্গীর
প্রায় অর্ধ-সহস্র কোটি টাকা খেলাপি ঋণের দায়ে চট্টগ্রামভিত্তিক মাবিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাহাঙ্গীর আলমকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যন্ডার্ডকে জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।
বুধবার চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম মিলির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, "১০৭ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ৬২৬ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড মাদাম বিবিরহাট শাখার দায়ের করা মামলায় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।"
জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন মাবিয়া গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে জিলানী ট্রেডার্স, মাবিয়া শিপ ব্রেকার্স, মাবিয়া স্টিল কমপ্লেক্স, ব্রাদার্স ইস্পাত ইন্ডাস্ট্রিজ, এফএমএস ইস্পাত শিপ ব্রেকিং, আলী স্টিল এন্টারপ্রাইজ, খাজা আজমীর করপোরেশন এবং ফাহিম স্টিল রিং রোলিং মিলস ছাড়াও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান।
অর্থঋণ আদালত সূত্র জানায়, মাবিয়া গ্রুপের কাছে সিটি ব্যাংকের দুই শাখার প্রায় ১৬১ কোটি টাকা, মাবিয়া শিপ ব্রেকিং ইউনিট-২ এর নামে এবি ব্যাংক সিডিএ শাখার ১১৭ কোটি টাকা, মাবিয়া শিপ ব্রেকার্সের কাছে সোশাল ইসলামী ব্যাংকের ১২১ কোটি টাকা, আলী স্টিল এন্টারপ্রাইজের কাছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৭৭ কোটি টাকা, ফাহিম এন্টারপ্রাইজের কাছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৩৫ কোটি টাকাসহ আরো কয়েকটি ব্যাংকের পাওনা রয়েছে।
ব্যাংকগুলোর তথ্যমতে, ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ব্যাংক থেকে এসব ঋণ নেয় প্রতিষ্ঠানটি। বিদেশ থেকে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ও রড উৎপাদন কারখানায় বিনিয়োগ করতে এই ঋণ দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিবর্তে জায়গা কিনতেই ঋণের টাকা বিনিয়োগ করেছেন।
বুধবার মাবিয়া গ্রুপের কর্ণধার জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম মিলির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে আবেদন করেন আইনজীবী জাহিদুল করিম।
এর আগে বুধবার ঋণ খেলাপি ও চট্টগ্রামভিত্তিক বাগদাদ গ্রুপের এমডি ফেরদৌস খান আলমগীর (৫৫) কে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সোমবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান জেলার শীর্ষ ঋণ খেলাপিদের গ্রেপ্তারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে বিশেষ নির্দেশ প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের তথ্য মতে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দশমাসে আদালত ১ হাজার ৩৭৩ টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।