মঙ্গলের পর বৃহস্পতিতেও পানির অস্তিত্ব!
মঙ্গলের পর এবার জীবন ধারণের আশা জাগাল সৌরজগতের আরও এক গ্রহে। সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির বুকে পানির খোঁজ দিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তারা লিখেছেন এমন আশার কথা। গ্যাসে পরিপূর্ণ সর্ববৃহৎ গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে কিঞ্চিৎ পানির অস্তিত্ব মিলেছে বলে দাবি তাদের। এরপর ভিনগ্রহে প্রাণের থাকার সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতি সৌরজগতের সর্ববৃহৎ গ্রহ, গ্যাস এবং তরলে পরিপূর্ণ। এত ধরনের গ্যাসের মধ্যে সবসময়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া চলতে থাকে। ফলে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং অনুঘটকের উপস্থিতিতে অনুকূল পরিবেশের বিক্রিয়ার পর পানির তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে বেশ সংশয় ছিল।
বৃহস্পতির পরিবেশে এমনটা হওয়া সম্ভব নয় বলেও মনে করতো বিজ্ঞানীদের একাংশ। কিন্তু সম্ভাবনা যে ষোল আনাই আছে, তার জানাল নাসার পাঠানো যান 'জুনো'। নেচার জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি থেকে জানা গেছে, ২০১১ এবং ২০১৬- দু'বছর জুনোকে পাঠানো হয়েছিল বৃহস্পতিতে। তার পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে সর্ববৃহৎ গ্রহের বায়ুমণ্ডলে অন্তত ০.২৫ শতাংশ পানি রয়েছে।
জুনোকে নিয়ে গবেষক দলের প্রধান বিজ্ঞানী স্কট বোলটন বলেন, বৃহস্পতি আমাদের চমকে দিয়েছে। কেউ ভাবতেই পারিনি যে এমন একটা বায়ুমণ্ডলের স্তরে স্তরে প্রায় পানির অস্তিত্ব মিলতে পারে। দেখা গেছে, বায়ুমণ্ডলের একটা নির্দিষ্ট স্তরের নিচে মেঘ জমে। তাপমাত্রার হেরফেরে তা বৃষ্টির মতো ঝরবে। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
জুনো মিশনের আরেক বিজ্ঞানী চেং লি বলছেন, মূলত দুই নিরক্ষীয় অঞ্চলে জলের অস্তিত্ব মিলেছে। যে পরিমাণ পানির হিসাব দিয়েছিল আগের গ্যালিলিও যান, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পানিই আছে। গ্রহের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে এই পানির পরিমাণ তুলনা করে দেখতে হবে। তার মতে, বৃহস্পতিবার নিরক্ষীয় অঞ্চলের গঠন বেশ জটিল।
গুরুগ্রহের এই নয়া আবিষ্কার শুধু জীবন ধারণের সম্ভাবনাকেই উসকে দিল, তা নয়। বৃহস্পতিতে পানির অস্তিত্ব সৌরজগতের সামগ্রিক পরিমণ্ডলকেই নতুন করে চিনতে সাহায্য করবে, মহাজাগতিক বহু রহস্য সমাধানের পথে এগিয়ে দেবে বলে আশা চেং লির।