নতুন মোড়কে, নতুন ফ্লেভারে আসছে কোকা-কোলা
ভোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অভিনব সব প্রচারণা কৌশল অবলম্বন করছে কোকা-কোলা। বাজার দৌড়ে এগিয়ে থাকার জন্য সম্প্রতি তারা কোকের ক্যানগুলোকে চটকদার ডিজাইন ও মোড়কে মুড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শুধু যে বাইরের খোলনলচে বদলে ফেলেছে তা নয়, একই সাথে বিভিন্ন নতুন স্বাদের কোকও বাজারে এনেছে তারা। কোমল পানীয় পণ্যের প্রতি ভোক্তাদের আগ্রহের মাত্রা বাড়িয়ে তোলাই তাদের বর্তমান লক্ষ্য।
যুক্তরাষ্ট্রে কোকা-কোলার চেরি কোকের ক্যান বের হবে ম্যাজেন্টার উপর সাদা অক্ষরে কোকা-কোলার লোগো দিয়ে। অন্যদিকে জিরো সুগার ভার্সনের ক্যানে ব্যবহৃত হয়েছে কালো রংয়ের লোগো। কোকা-কোলার ভ্যানিলা কোক ক্যানের রং অনেকটা ভ্যানিলার মতোই ক্রিম রংয়ের এবং চেরি ভ্যানিলা ফ্লেভারের ক্যান বানানো হয়েছে দুটি রং মিলিয়ে।
এছাড়া, জিরো ক্যাফেইন এবং চিনিবিহীন কোকের ক্যানেও এসেছে পরিবর্তন।
২০২০ সালে কোকা-কোলা তাদের পোর্টফোলিও অর্ধেক ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের অধীনস্ত যেসব ব্র্যান্ডের পারফরমেন্স খারাপ, সেগুলোকে বাদ দিয়ে কোকের মতো প্রভাবশালী ব্র্যান্ডগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়। বর্তমানে কোকা-কোলা তাদের কোকের বোতল বা ক্যানের আউটলুক পরিবর্তন এবং নতুন পণ্য বাজারে আনার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। নতুন মোড়কে বিভিন্ন স্বাদের এসব কোক চলতি মাসের শেষ দিকেই বাজারে পাওয়া যাবে।
বাজারে টিকে থাকা
কোকা-কোলার উত্তর আমেরিকা শাখার কোক চয়েস পোর্টফোলিওর সিনিয়র ব্র্যান্ড ম্যানেজার নাটালিয়া সুয়ারেজ বলেন, "বিভিন্ন ফ্লেভারের কোকের প্যাকেজিংয়ে পরিবর্তন আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে এর আউটলুককে আরও আধুনিক এবং সহজ করে তোলা।"
তিনি আরও জানান, নতুন প্যাকেজিংগুলো দেখে মানুষ সহজেই বুঝতে পারবে কোনটি কোন ফ্লেভারের এবং জিরো-সুগার (ক্যালরি ফ্রি) ও ফুল-সুগারের মধ্যেও পার্থক্য করতে পারবে।
গত বছর থেকেই নিজেদের পণ্যের প্যাকেজিংকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয় কোকা-কোলা। সে সময়ই তারা তাদের ডায়েট কোক এবং কোক জিরো সুগারের প্যাকেজিং পরিবর্তন করে। তাছাড়া, ডায়েট কোকেক স্বাদ বহুলাংশে সাধারণ কোকের মতো রাখতে কোকের রেসিপিতেও নতুন টুইস্ট এনেছে তারা।
গত বছর কোকা-কোলার সিইও জেমস কুইন্সি সিএনএন বিজনেসকে বলেন, "এটা আসলে সুপারমার্কেট এবং মুদি দোকানগুলোতে নিজেদের পণ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য জন্য এক ধরনের সংগ্রাম।
কোকের মধ্যেই কফি!
কোক সম্পর্কে মানুষের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরির আরেকটি উপায় হলো কোকের গতানুগতিক স্বাদকে পরিবর্তন করা। সে কারণেই কফির নতুন একটি ফ্লেভারে কোক বাজারজাত করতে যাচ্ছে কোকা-কোলা!
বছরখানেক আগেই কফি পাউডার দিয়ে তৈরি কোক বাজারে এনেছিল প্রতিষ্ঠানটি। উত্তর আমেরিকার বাজারে প্রথম এর বিপণন শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে কোকা-কোলা ট্রেডমার্ক এর ব্র্যান্ড ডিরেক্টর ব্র্যান্ডন স্ট্রিকল্যান্ড বলেন, "কফি ফ্লেভারের কোক বাজারে আনার পর ভোক্তাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম।"
ইতোমধ্যেই ডার্ক ব্লেন্ড, ভ্যানিলা এবং ক্যারামেল কফি ফ্লেভারে কোক বাজারজাত করেছে কোকা-কোলা। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মোচা ফ্লেভারের কোকও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কোকের মতো কোমল পানীয়ের বাইরেও নতুন 'কোক এনার্জি' ড্রিংক বাজারে আনার চেষ্টা করেছিল কোকা-কোলা। ২০২০ সালে তারা উত্তর আমেরিকার বাজারে এই পণ্য নিয়ে আসে, কিন্তু আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় তারা এটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
সূত্র: সিএনএন