মাঝারি পূঁজি নিয়েও জিতলো সাকিবের বরিশাল
১২ বলে প্রয়োজন ২২ রান। উইকেটে তখন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ফরহাদ রেজা। ৩৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে বেশ আগেই উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া মুশফিকের দিকেই তখন তাকিয়ে তার দল খুলনা টাইগার্স। কিন্তু ১৯তম ওভার করতে এসে নিমেষেই ম্যাচের চেহারা বদলে দিলেন ফরচুন বরিশালের পেসার মেহেদি হাসান রানা। খুলনার বাকি থাকা ৩ উইকেটই তুলে নিলেন তিনি। মাঝারি সংগ্রহ নিয়েই দারুণ এক জয় পেল সাকিব আল হাসানের দল।
শনিবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে খুলনাকে ১৭ রানে হারিয়েছে বরিশাল। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ম্যাচ দিয়ে জয়ে ফিরলো দলটি। চার ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পাঁচ নম্বরে আছে বরিশাল। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে খুলনা।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে ফরচুন বরিশাল। শেখ মেহেদি হাসান, থিসারা পেরেরাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ক্রিস গেইল ছাড়া কেউই রান করতে পারেননি। ৯ উইকেটে ১৪১ রানে থামে বরিশালের ইনিংস। জবাবে মাঝারি এই লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমে শুরুতেই দিক হারানো খুলনা টাইগার্স মাঝে ইনিংস গুছিয়ে নিয়েও শেষ করতে পারেনি। ১৯ ওভারে ১২৪ রানে অলআউট হয়ে যায় মুশফিকের দল।
মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় খুলনা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই বিদায় নেন দলটির ক্যারিবীয় ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। চতুর্থ বলে সৌম্য সরকারকেও ফিরিয়ে দেন বরিশালের আফগান স্পিনার মুজিব-উর-রহমান। আগের ম্যাচে ১ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনার এদিন প্রথম বলেই বিদায় নেন।
শুরুতেই বিপাকে দলে কিছুটা স্বস্তি ফেরান রনি তালুকদার ও মেখ মেহেদি হাসান। তৃতীয় উিইকেটে ৩১ রান যোগ করেন তারা। দলীয় ৩৬ রানে আউট হন শেখ মেহেদি, তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। এ সময় রনিও সাজঘরে ফেরেন। ১৬ বলে ১৪ রান করেন।
৩৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খুলনা তখন দিশেহারা। এখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিক ও ইয়াসির আলী রাব্বি। এই জুটি ৪৬ রান যোগ করে। মেহেদি রানার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৩ রান করেন রাব্বি। এরপরও চাপ বাড়েনি খুলনার। উইকেটে গিয়েই মারকুটে মেজাজে ব্যাট চালানো শুরু করেন থিসারা পেরেরা।
মুশফিক-থিসারা জুটিতে খুলনা যখন জয়ের স্বপ্ন বুনছে, তখনই হয় ছন্দপতন। ৯ বলে ১৯ রান করেন ফিরে যান থিসারা। পরের ওভারে সেকুগে প্রসন্নও আউট হন। এরপর ১৯তম ওভারে বল হাতে ঝড় তুলে খুলনার ইনিংস শেষ করে দেন মেহেদি রানা। মুশফিক ৩৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন। ৩ ওভারে ১৭ রান খরচায় মেহেদির শিকার ৪ উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন মুজিব-উর-রহমান ও জ্যাক লিনটট।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশাল তাদের উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন। আগের কয়েক ম্যাচে পাঁচে ব্যাটিং ক্রিস গেইল এদিন ওপেনিং করতে নামেন। জ্যাক লিনটটের সঙ্গে তার জুটিটা অবশ্য বড় হয়নি। ৬ বলে ১১ রান করে আউট হন লিনটট। এরপর জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আরও কিছুটা পথ পাড়ি দেন গেইল।
এদিন একেবারে ধীর-স্থির মেজাজে ব্যাটিং করতে দেখা যায় ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যানকে। জিয়াউরও দেখেশুনে খেলছিলেন, এরপরও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ১০ রান করে বিদায় নেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
দলীয় ৭৯ রানে গিয়ে থামেন গেইল। খুলনার লঙ্কান লেগ স্পিনার সেকুগে প্রসন্নর শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন তিনি। এরপর কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয় দুই অঙ্কের রান করেন। শান্ত ১৯ ও হৃদয় ২৩ রান করেন।
তিনে ব্যাটিং করা সাকিব এদিন সাতে নামেন। জায়গা বদলেও বরিশালের অধিনায়ক রানের দেখা পাননি, ৯ রান করেই থামেন তিনি। এ ছাড়া নুরুল হাসান সোহান ৮ ও ইরফান শুক্কুর ২ রান করেন। ২টি করে উইকেট নেন খুলনার কামরুল ইসলাম রাব্বি, থিসারা পেরেরা ও ফরহাদ রেজা। একটি করে উইকেট পান শেখ মেহেদি হাসান, শরিফুল্লাহ ও সেকুগে প্রসন্ন।