সাব-কন্ট্রাক্টে ভ্যাট মওকুফ চান পোশাক রপ্তানিকারকরা
- অপরিবর্তিত সোর্স ট্যাক্স ও কর্পোরেট ট্যাক্স চেয়েছে বিজিএমইএ
- রপ্তানি প্রণোদনার উপর ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার চায় তারা
- মাসিক পোশাক রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলার, বাড়ার সম্ভাবনা আছে
- সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে এনবিআর
রাজস্ব কর্তৃপক্ষকে সাব-কন্ট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং এর উপর ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) মওকুফ করার আহ্বান জানিয়েছে পোশাক রপ্তানিকারকরা। সাব-কন্ট্রাক্টে ভ্যাট এই ধরনের অনেক সাব-কন্ট্রাক্টিং কারখানাকে আর্থিক সংকটে ফেলে বলে উল্লেখ করে তারা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর সাথে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ কথা জানায় তারা।
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর নগদ সহায়তাসহ বর্তমানের অনেক সুবিধাই পোশাক খাতকে দেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পকে নিজেদের সক্ষমতা তৈরির তাগিদ দিয়েছেন এনবিআর এর চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম।
আলোচনায় বিজিএমইএ দাবি করে, সাব-কন্ট্রাক্টিং কারখানাগুলোর এক-তৃতীয়াংশ কারখানা এই ভ্যাটের কারণে সমস্যায় পড়েছে।
ইতোমধ্যেই রপ্তানিমুখী পোশাক ইউনিটগুলোর স্থানীয়ভাবে ক্রয় করা পণ্য এবং পরিষেবার উপর থেকে ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু, বিদেশি বাজারে পণ্য রপ্তানি করলেও সাব-কন্ট্রাক্টিং ফ্যাক্টরিগুলো এখনও এই সুবিধা পায় না।
পোশাক-নির্মাতারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিদ্যমান সোর্স ট্যাক্স এবং কর্পোরেট ট্যাক্স অপরিবর্তিত রাখার পাশাপাশি নগদ রপ্তানি প্রণোদনার উপর ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার চায় এনবিআর এর কাছে।
বর্তমানে পোশাক-নির্মাতাদের কাছ থেকে ১২ শতাংশ কর্পোরেট ট্যাক্স আদায় করা হয়, যেখানে সবুজ কারখানার ক্ষেত্রে এই হার ১০ শতাংশ।
বিজিএমইএ এনবিআরকে বলে, পোশাক কারখানাগুলোকে বিদ্যমান কর্পোরেট ট্যাক্স স্লাবের সমান, অর্থাৎ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়। কর মূল্যায়নের সময় রাজস্ব কর্মকর্তারা সম্পদ নিষ্পত্তি, উপ-চুক্তি আয় এবং অন্যান্য ব্যয়ের লাভ মানতে রাজি না হওয়ায় এই পরিমাণ কর দিতে হয় তাদেরকে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এনবিআরকে বলেন, কোভিড-পরবর্তী বাজার প্রতিযোগিতার কারণে পোশাক উদ্যোক্তারা চাপের মধ্যে রয়েছেন।
"আমরা এখন ব্যবসায়িক সুবিধা উপভোগ করছি কারণ আমরা অনেক দেশের তুলনায় মহামারির সাথে ভালভাবে লড়াই করতে পেরেছি। রপ্তানির অবস্থা মহামারির আগের সময়ের তুলনায় ভালো," বলেন ফারুক হাসান।
তিনি জানান, মাসিক পোশাক রপ্তানি এখন প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি এবং এখনও পরিমাণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচনায় এক্সটার্নাল বাণিজ্যে হারমোনাইজড সিস্টেম কোড (এইচএস কোড) সম্পর্কিত সমস্যা সহজ করা, কারখানার জন্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানির উপর কর কমানো, আমদানিকৃত জিনিসের ওজনের অমিলের ক্ষেত্রে পোশাক প্রস্তুতকারকদের জরিমানা না করা এবং টাইপিং ভুল সংশোধন সহজ করার মতো বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরে বিজিএমইএ।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তারা পোশাকের কাঁচামাল আমদানি ও কাপড় রপ্তানি সহজ করতে চান।
তবে তিনি বলেন, বাহ্যিক বাণিজ্য শিথিল হওয়া উচিত, কিন্তু পাইকারি খাত শিথিল হওয়া উচিত নয়।
"আমরা এই গ্রিপ খুব বেশি শিথিল করলে এর অপব্যবহার হতে পারে," বলেন তিনি।
তিনি পোশাক রপ্তানিকারকদের বলেন, "কোভিড মোকাবেলায় সরকার আপনাদেরকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ফলেই পশ্চিমা বিশ্বে রপ্তানি বেড়েছে।"