‘পেশাদারিত্ব আগে, সম্পর্ক পরে’- বড় ভাই নাফিস প্রসঙ্গে তামিম
তামিম ইকবালের বয়স তখন ১১। সে সময় মারা যান তার বাবা ইকবাল খান। দুই সন্তানকে নিয়ে ঘোর সঙ্কটে পড়ে যান তামিম ইকবালের মা। পরিবারের দুঃসময় বুঝতে সময় নেননি তামিমের বড় ভাই ও বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবাল। ১৫ বছর বয়সেই সংসারের বোঝা মাথায় তুলে নেন তিনি।
নিজের পেটে কিছু পড়ুক আর না পড়ুক, সংসার ও ছোট ভাই তামিমের চিন্তা সব সময় মাথায় থাকতো নাফিসের। নিজে কম খেয়ে তামিমের জন্য টাকা জমাতেন বাংলাদেশের হয়ে ১১ টেস্ট ও ১৬টি ওয়ানডে খেলা নাফিস। ছোট ভাই তামিম বড় হয়েছেন, জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন। এখন তিনি ওয়ানডে দলের অধিনায়ক।
চট্টগ্রামবাসীর স্বপ্ন ছিল, দুই ভাই এক সঙ্গে জাতীয় দলে খেলবেন। সেটা হয়নি, এক সঙ্গে জাতীয় দলে খেলা হয়নি তাদের। তবে এক বিন্দুতে এসে মিলেছেন দুই ভাই। দুজনই এখন জাতীয় ক্রিকেট দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তামিম ইকবাল দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, নাফিস বাংলাদেশ দলে ফিরেছেন ম্যানেজার হয়ে।
জাতীয় দলের ছায়া দল বাংলাদেশ টাইগার্সের ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ ছিল নাফিসের। দলটির কার্যক্রম না থাকায় জাতীয় দলের ম্যানেজার হয়ে যান তিনি। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজেও একই দায়িত্বে নাফিস। প্রথম ম্যাচের আগের দিন ছোট ভাই তামিমকে সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে আসেন তিনি। এদিন আলোচনায় এলো তাদের সম্পর্কের ব্যাপারটিও, কিন্তু তামিম জানালেন জাতীয় দলে পেশাদারিত্ব আগে, পরে সম্পর্ক।
মঙ্গলবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনেক প্রশ্নের ভিড়ে তামিমকে প্রশ্ন করা হলো বড় ভাইয়ের সঙ্গে কেমন উপভোগ করছেন। উত্তরে তামিম বলেন, 'এই জায়গায় আমাদের অনেক পেশাদার হতে হবে। তিনি আমার ভাই, এটা আমাদের সম্পর্ক। তবে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময় আমি তাকে ম্যানেজার হিসেবে আর তিনি আমাকে খেলোয়াড় হিসেবে সম্মান করতে হবে। এটা পেশাদার জায়গা, যেখানে পেশাদারিত্বই আগে আসবে, সম্পর্ক পরে।'
গত নভেম্বরে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন নাফিস ইকবাল। ওই সিরিজে তামিমের খেলা হয়নি। দুই ভাইয়ের এক মোহনায় মেলার সিরিজ এটা। এবার তাদের রসায়ণও জমেছে। প্রথম দিনের অনুশীলনে নেটে তামিমকে থ্রোয়ারে বল করেন নাফিস, চলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনাও।