পরীক্ষায় নকল করার জন্য অস্ত্রোপচার করে কানে ব্লুটুথ ডিভাইস লাগালেন মেডিকেল শিক্ষার্থী
পরীক্ষায় পাস করতে অভিনব কৌশলে নকলের আশ্রয় নিলেন ভারতের এক মেডিকেল শিক্ষার্থী। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কানে অস্ত্রোপচার করে একটি মাইক্রো ব্লুটুথ ডিভাইস বসিয়ে এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষায় বসেন ওই শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজের।
ওই শিক্ষার্থী বারবার এমবিবিএস সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। ১১ বছর ধরে মেডিকেল কলেজে পড়ছেন তিনি, কিন্তু বারবার ফাইনাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। এবারই ছিল তার শেষ সুযোগ। এজন্যই তিনি পাস করতে এই প্রতারণার পথ বেছে নেন।
মেডিকেল কলেজের ডিন ডা. সঞ্জয় দীক্ষিত দি ইনডিপেনডেন্টকে জানান, ওই শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন পরিদর্শকরা তার ট্রাউজারের ভেতরের পকেটে একটি মোবাইল ফোন খুঁজে পান। ফোনটি একটি ব্লুটুথ ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
কিন্তু ওই শিক্ষার্থীর কাছে তখন ব্লুটুথ ডিভাইস খুঁজে পাননি পরিদর্শকরা।
সঞ্জয় দীক্ষিত বলেন, 'সে সোমবার আরও ১৩ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে জেনারেল মেডিসিন পরীক্ষা দিচ্ছিল। তখন দেবী খন দেবী অহিল্যা বাঈ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল আকস্মিকভাবে সেখানে পৌঁছায়। দলটি এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মোবাইল ফোন পায়। সেটি একটি ব্লুটুথ ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত ছিল।'
এরপর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী স্বীকার করেন যে একজন ইএনটি সার্জন তার কানে ত্বকের রঙের সাথে মিলিয়ে একটি মাইক্রো ব্লুটুথ ডিভাইস লাগিয়ে দিয়েছেন।
আরেকজন শিক্ষার্থীর কাছেও ব্লুটুথ ডিভাইসসহ মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। তবে তিনি সেটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কানে লাগাননি।
ডিভাইসগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে কানে ব্লুটুথ ডিভাইস লাগানো শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ভারতে পরীক্ষায় নানা উপায়ে নকল করার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস কেলেঙ্কারিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ৬৩৪ জন ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিল করে। অনেকে গ্রেপ্তারও হন।
এর আগে, ২০১৫ সালে ভারতের একটি একটি ছবি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ঝড় তোলে। ওই ছবিতে দেখা যায়, স্কুলের দেয়াল বেয়ে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ করছে অগুনতি মানুষ। নকল সরবরাহকারীদের মধ্যে ছিলেন কয়েকজন পরীক্ষার্থীদের মা-বাবাও।
ওই ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল অনলাইনে। এরপর কয়েকশো মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন অভিভাবকও ছিলেন। আর বহিষ্কার হয়েছিল অন্তত ৭৫০ শিক্ষার্থী।
- সূত্র: দি ইনডিপেনডেন্ট