‘আট নম্বর সার্জারি থেকে বিরত থাকলাম, আপাতত মাঠ ডাকছে’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেকবার ইনজুরিতে পড়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। চোট কাটিয়ে বারবার ফিরে এসেছেন সবুজ গালিচায়। দুই পায়ে সাতটি অস্ত্রোপচার করিয়েও খেলে এসেছেন ওয়ানডের সফলতম এই অধিনায়ক। কোমড়ের ডিস্কে সমস্যায় আবারও অস্ত্রোপচার দরকার পড়েছিল মাশরাফির। ভারতের চেন্নাইতে গিয়েছিলেন ডাক্তার দেখাতে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করানোর কথা ছিল তার। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তিনি।
অস্ত্রোপচার না করিয়েই আগামী সোমবার দেশে ফিরে আসবেন মাশরাফি। দেশে ফিরে কয়েকদিনের অনুশীলরে পর লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলবেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। যদিও চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থাকতে হবে বলে অষ্টমবারের মতো চুরি-কাঁচির নিচে যাননি মাশরাফি।
চেন্নাই থেকেই দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এসব জানিয়েছেন মাশরাফি। সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, 'অস্ত্রোপচার করালে ৯ মাসের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে। সেটা অনেক সময়। এ কারণে করাইনি। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থেকে খেলা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। ওষুধ আছে, সেগুলো নিয়মিত খেতে হবে। এ ছাড়া ১০ এর মধ্যে ব্যথার পরিমাণ ৬ ছাড়ালে ইনজেকশন নিতে হবে। সবকিছু মানিয়ে যতোটা খেলা যায়, আপাতত এমনই পরিকল্পনা।'
অস্ত্রোপচার না করানোর আরও কারণ আছে। খেলা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই অস্ত্রোপচারটি আবশ্যক। না খেললে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়বে না। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন মাশরাফি। এমনিতেও বেশিদিন খেলা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই তার। এ কারণে পুনর্বাসন ও ওষুধে আরও কিছুদিন খেলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা মাশরাফি। ডাক্তার দেখাতে গত ৩ মার্চ ভারতে যান তিনি।
মাঠে ফেরার ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দিয়েছেন মাশরাফি। ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'শেষ তিনটা দিন অর্থোপেডিক ডাক্তার, সার্জন,স্পোর্টস মেডিসিন ডাক্তার এবং ফিজিওর সাথে সময় দিয়ে অবশেষে ৮ নম্বর সার্জারি থেকে বিরত থাকলাম। হয়তো পরে কোনো এক সময় দেখা যাবে। আবারও সেই পুনর্বাসন শুরু, এর শেষ কোথায় আল্লাহ জানেন। আপাতত মাঠ ডাকছে, (ডিপিএল)। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। লিজেন্ড অফ রুপগঞ্জ, ইনশা আল্লাহ সি ইউ অন গ্রাউন্ড।'
বিপিএলকে সামনে রেখে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনুশীলনে ফেরেন মাশরাফি। দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরে শুরুটা ভালো যায়নি তার। শুরুর দিনই অস্বস্তিতে দেখা যায় তাকে। পিঠের ব্যথার কারণে সেদিন বোলিং করতে পারেননি। কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়ে আবার অনুশীলন শুরু করেন তিনি। সেদিনই গ্লুটসে (কোমড়ের নিচের অংশে) টান লাগে মাশরাফির।
আবারও কদিন বিশ্রামে থাকতে হয় সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ককে। এরপর অনেকটা ফিট হয়ে মিনিস্টার ঢাকার হয়ে বিপিএল খেলতে শুরু করেন মাশরাফি। এ যাত্রাও মসৃণ হয়নি তার। চার ম্যাচ খেলার পর কোমড়ের ব্যথা বাড়ায় আর মাঠে নামা হয়নি অভিজ্ঞ এই পেসারের। বিপিএলের চার ম্যাচে ৪ উইকেট নেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে ২০২০ সালের ৬ মার্চ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন মাশরাফি। ওই সিরিজে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর জাতীয় দলে আর ডাক পড়েনি তার। করোনাকালের বিরতির পর ২০২০ সালেরই ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি দিয়ে মাঠে ফেরেন মাশরাফি। বিপিএল খেলার আগে ওই আসরেই সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেন তিনি। এবারের প্রিমিয়ার লিগে রূপগঞ্জে নাম লেখানো মাশরাফি আগের আসরে শেখ জামালের হয়ে খেলেন।