আগামী বছরের মধ্যেই দক্ষ জনবল সংকট কাটিয়ে উঠবে প্লাস্টিক শিল্প
দক্ষ জনবলের অভাবই প্লাস্টিক শিল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই দক্ষ জনবল তৈরির জন্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) নির্মাণ করছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আগামী বছরের শুরুতেই এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর সভাপতি ও প্লাস্টিক শিল্প উদ্যোক্তা মো. জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, "আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যে, এই দেশে প্লাস্টিক সেক্টরের জন্য কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিলনা। আমরা প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ করে সেটি এখন করেছি। বাকি কাজ শেষ করতে বুধবার (২০ এপ্রিল) ১৫ কোটি টাকার একটি চুক্তি করেছি। আশাকরি আগামী বছরের শুরুতে এই প্রকল্প পুরোপুরি শেষ হবে।"
বুধবার বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) আয়োজিত 'বাংলাদেশে খেলনা সেক্টরে সম্ভাবনা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র না থাকায় ছোট ও নতুন আসা কারখানাগুলোতে কর্মী পাওয়া ও পণ্যের ডিজাইন করতে ঝামেলা পোহাতে হত।
তিনি বলেন, "প্লাস্টিক এখন অনেক বড় একটি সেক্টর। এখানে প্রায় ১২-১৫ লাখ লোক কাজ করে। এই সেক্টর থেকে ১ বিলিয়িন ডলারের ওপরে রপ্তানি হচ্ছে। সুতরাং এতবড় একটি সেক্টরে ডিসিপ্লিন থাকা দরকার।"
"সরকার কেমিকেল পল্লী করছে, যেটা এখন প্রায় শেষের দিকে। কাজ শেষ হওয়ার পর এর ৯০ একর জমি প্লাস্টিক সেক্টরকে দেওয়ার জন্য মন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন", যোগ করেন তিনি।
তবে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যাতে প্লট পেতে পারে, সেজন্য জমির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার দাবি জানান জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর ২০৩১ ও ২০৪১ সালের টার্গেট যদি বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে অনেক সেক্টরকেই আমাদের রপ্তানিখানে নিয়ে আসতে হবে। এখানে প্লাস্টিক হতে পারে একটি বড় খাত।"
বিপিজিএমইএ-এর সভাপতি শামিম আহমেদ বলেন, "প্লাস্টিকে বর্তমানে ৪০ হাজার কোটি টাকার লোকাল মার্কেট। এখানে খেলনাজাতীয় পণ্য আমাদের প্লাস্টিক সেক্টরের একটি সাব সেক্টর।"
খেলনা রপ্তানি আয়ের হিসাব উল্লেখ করে শামিম আহমেদ বলেন, ২০১৮-১৯ সালে খেলনা রপ্তানি হয়েছিল ৩৭ মিলিয়ন ডলারের। ২০১৯-২০ অর্থবছরে খেলনা রপ্তানি হয়েছিল ৩৩ মিলিয়ন ডলারের। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৩৬ মিলিয়ন ডলারের।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে খেলনা একটি উদীয়মান খাত। এই খাতে প্রয়োজন দক্ষ জনবলের। এর মাধ্যমে সৃষ্টি হবে অনেক কর্মসংস্থান। ফলে ভবিষ্যতে দেশের অর্থনিতিতে খেলনা সেক্টর বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, "আমরা দুটো শিল্প পল্লী করছি। একটি কেমিকেল পল্লী, অন্যটি পাস্টিক পল্লী। এই জায়গা যেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা পায় সেটি দেখা হবে।"
মূল্যের বিষয়ে তিনি বলেন, "আমরা সকল খরচ বিবেচনা করে দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করব, যাতে ছোট ব্যবসায়ীরাও সেখানে যেতে পারে।"