সাতক্ষীরায় কলেজ ছাত্রকে নির্যাতন: অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রকে ৬ ঘণ্টা ধরে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, ভিডিও ধারণ করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কারপত্রে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আকিবকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক জানান, "ঘটনায় জড়িত থাকা তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আকিবকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। একই সঙ্গে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায়ভার সংগঠন নেবে না।"
রোববার (২৪ এপ্রিল) বেলা একটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা তালা সরকারি কলেজের একটি কক্ষের টর্চার সেলে বেঁধে নির্যাতন করা হয় ওই কলেজ ছাত্রকে।
চলতি বছর এইচএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে তন্ময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্র।
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমি বারবার অনুরোধ করেছিলাম, আমি রোজা আছি আমাকে আর মেরো না, তবুও শোনেনি। তারপরও আমাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক পিটিয়েছে। কথা বললেই মেরেছে। বেশি মেরেছে আকিব নামের ছেলেটা। পরে এই ঘটনা বাড়ির দিকে জানাজানি হলে, আমার চাচাতো ভাইয়েরা আমাকে উদ্ধার করতে সেখানে যায়। তাদেরকেও মারধোর করে। এক পর্যায়ে সেখান থেকে আমার চাচাতো ভাইরা আমাকে উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।"
উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তির পর অভিযুক্ত পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামী করে তালা থানায় মামলা করতে যান নির্যাতনের শিকার কলেজ ছাত্রের বাবা আজিজুর রহমান। তিনি বলছেন, মামলা করতে যাওয়ার পর তাকে হুমকি দিতে থাকেন প্রধান অভিযুক্ত সৈয়দ আকিবের বাবা সৈয়দ ইদ্রিস।
অবশেষে ঘটনার পরদিন সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাসহ চার ছাত্রলীগ কর্মী ও এক স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়।
মামলার প্রধান অভিযুক্তরা হলেন, সৈয়দ আকিব (২৫), সৌমিত্র চক্রবর্তী (৩২), জে.আর সুমন (২৫), জয় (২৪) ও নাহিদ হাসান উৎস (২৪)। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত সৈয়দ আকিব তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সৌমিত্র চক্রবর্তী উপজেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাকিরা ছাত্রলীগের কর্মী।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, "মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পর আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। আসামীরা পলাতক রয়েছে।"