শিক্ষা ভবনের ঠিকাদার ও যুবলীগের সাবেক নেতা শফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ
শিক্ষা ভবনের টেন্ডারবাজির প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলামকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল।
দুদকের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২১ নভেম্বর শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক নেয়ামুল আহসান গাজী। মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে এবং তার অবৈধ সম্পদেরে খোঁজ খবর নিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সচিব জানান।
দুদক জানিয়েছে, মামলা করার সময় শফিকুলের যেসব সম্পদের তথ্য পেয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এর বাইরেও তার অনেক সম্পদ আছে বলে দুদক তথ্য পেয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে যাচাই বাছাই করতে শফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, শফিকুল বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৪ কোটি ৪১ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
শফিকুল ইসলাম কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক। বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, শফিকুল ইসলাম ছাত্রজীবনেই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজ হিসেবে। ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শিক্ষা ভবনে টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে পিটুনি খেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্যের ছাত্র ও তৎকালীন মুহসীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল। গ্রেপ্তার অবস্থায় পত্রিকায় তার ছবি ছাপা হয়েছিল। এরপর একাধিকবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও শিক্ষা ভবন ছাড়েননি শফিক। ধীরে ধীরে নিজেকে পরিণত করেছেন শিক্ষা ভবনের টেন্ডারবাজির প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, ঠিকাদারি শফিকুলের মূল পেশা নয়। তার মূল পেশা টেন্ডারবাজি। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট যেকোনো কাজ যিনি পান না কেন প্রতিটি টেন্ডারে ৫ শতাংশ কমিশন দিতে হতো শফিককে। এর মাধ্যমেই মূলত তিনি বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন।