পা ফেলার জায়গা নেই শিমুলিয়া ঘাটে
দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২৩টি জেলার প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট। গত কয়েক দিনের তুলনায় এই ঘাটের যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের চাপ বেড়েছে। ফেরি স্বল্পতায় দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এতে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৮ শতাধিক ছোট-বড় যানবাহন।
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিকান্দি নৌপথে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে ৮৫টি লঞ্চ ও ১৫২টি স্পিডবোটসহ ৮টি ট্রলার।
সেহরির সময় থেকেই পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী থেকে শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে আসতে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। এতে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানবাহনের সারি দীর্ঘ হতে শুরু করে। এদিকে স্পিডবোট ও লঞ্চঘাট যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় রয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ থাকলেও বাড়ি ফিরতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা। এক নম্বর ঘাট দিয়ে শুধু মোটরসাইকেল পার করছে বিআইডব্লিউটিসি। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষকে। সকাল থেকে চারটি ফেরিতে করে কয়েক হাজার মোটরসাইকেল পার হয়েছে।
আরাফাত রহমান ঢাকার হাজারীবাগ থাকেন, যাবেন খুলনায়।
তিনি বলেন, "আমি একটি লেদার কোম্পানিতে চাকরি করি এবং সাথে মোটর বাইক রাইড শেয়ার করি। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রওনা দিয়েছি। আমরা যদি বাসে বা ভেঙে যাই যেতে লাগবে ৩০০০ টাকা, আসতে ৩০০০ টাকা। কিন্তু এখন মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছি, ৯০০ টাকার তেল ভরেছি। আশা করি এতেই আমি বাড়িতে পৌঁছে যাব। তবে ফেরিঘাটে এসে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে । এতসংখ্যক মোটরসাইকেল কিভাবে পার হবে, কখন পার হবে বলতে পারছিনা।"
"সাড়ে পাঁচটা বাজে এসেছি, এখনো সিরিয়াল পাইনি। আমার আগে আরও তিনটি ফেরি ছেড়ে গেছে। ফেরি সংখ্যা বাড়ানো দরকার ছিল যাতে নির্বিঘ্নে যাত্রীরা পার হতে পারে।"
আরেক যাত্রী আবদুল হালিম বলেন, "মিরপুর থেকে বাসে করে দেড় ঘণ্টায় মাওয়া ঘাটে এসেছি। লঞ্চে পাড়ি দিব। বরিশাল যাব; রাস্তায় কোন সমস্যা হয় নাই কিন্তু লঞ্চঘাটে প্রচুর যাত্রী।"
এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, "কাল থেকে প্রচন্ড রকমের যাত্রীদের চাপ রয়েছে। স্পিডবোট ও লঞ্চঘাট এলাকায় পা ফেলার মতো জায়গা নেই। ভোর থেকে ১৫২টি স্পিডবোট ও ৮৫টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। গতকাল রাতে সাতটা বাজে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়। আজ সকালে আবার লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সাধারণ যাত্রী যারা বাসে করে, সিএনজিতে করে আসছে, তাদের সংখ্যাটাই বেশি। তারাই লঞ্চে পার হচ্ছে। যাদের টাকা নিয়ে সমস্যা নাই তারা স্পীডবোটে যাচ্ছে।"
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামাল হোসেন জানান, বর্তমানে মোট ১০টি ফেরি পারাপারে কাজ করছে। সকাল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক শতাধিক গাড়ি পার হয়েছে।
ঘাট এলাকায় প্রায় ৮ শতাধিক যানবাহন রয়েছে। সকাল থেকে শুধু মোটরসাইকেল বহন করে চারটি ফেরি ছাড়া হয়েছে। কী সংখ্যক মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে তা বলা মুশকিল; মোটরসাইকেলের চাপই এবার ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি, উল্লেখ করেন তিনি।