এক সেঞ্চুরিতে কয়েকটি রেকর্ড মুশফিকের
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন। বড় সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েই এদিন শুরু করা ঘরের মাঠের দলটির। আর মুশফিকুর রহিমের? অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের হয়তো কয়েকটি লক্ষ্য ছিল। প্রথমটা দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৫ হাজারের মাইলফলক স্পর্শ করা। ৫৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৫ রান করে পৌঁছে যান কাঙ্খিত লক্ষ্যে।
দ্বিতীয় লক্ষ্য সেঞ্চুরি। ৬৮ রান করে মাইলফলক ছোঁয়া মুশফিক যেন এরপর আরও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠেন। ঝুঁকিপূর্ণ কোনো শট নয়, পুরো টেস্ট মেজাজে খেলে পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। নিশ্চিতভাবেই তৃতীয় লক্ষ্য ছিল নিজের ইনিংস বড় করে দলের স্কোর বাড়িয়ে নেওয়া। কিন্তু এটা আর হয়নি। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা এই ব্যাটিং অস্ত্র।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দারুণ ব্যাটিংয়ে লঙ্কান বোলারদের পরীক্ষা নেন মুশফিক। ৪৪৯ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে ২৭০ বলে ৪টি চারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি, যা তার ক্যারিয়ারের ধীরতম সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১০৫ রান করে লঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার লাসিথ এমবুলদেনিয়ার বলে আউট হন মুশফিক। টেস্টে এটা তার অষ্টম সেঞ্চুরি। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকায় তিন নম্বরে আছেন তিনি। ১১টি সেঞ্চুরি নিয়ে সবার ওপরে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। ১০টি সেঞ্চুরির মালিক তামিম ইকবাল দুই নম্বরে।
দুই বছর আড়াই মাস পর টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন মুশফিক। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেন তিনি। ঘরের মাঠের ওই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে ২০৩ অপরাজিত থাকেন তিনি। ১০৫ রানের ইনিংসটি দিয়ে আরও কয়েকটি জায়গায় নিজেকে সবার ওপরে নিয়ে গেছেন মুশফিক।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট লড়াইয়ে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক এখন মুশফিক। লঙ্কানদের বিপক্ষে ১৬ টেস্টের ২৮ ইনিংসে ১ হাজার ১৪৮ রান করেছেন। ১৫ টেস্টের ২১ ইনিংসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮১৬ রান করেছেন সাঙ্গাকারা। ১৩ টেস্টের ১৭ ইনিংসে ১ হাজার ১৪৬ রান নিয়ে মাহেলা জয়াবর্ধনে এখন তিন নম্বরে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের। ১৩ টেস্টের ২৬ ইনিংসে ১ হাজার ৯০ রান করেছেন তিনি।
ঘরের মাঠেও সর্বাধিক রানের রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন মুশফিক। ৪৬ টেস্টে ৮২ ইনিংসে তার রান ২ হাজার ৮৪৭। ৩৮ টেস্টের ৭১ ইনিংসে ২ হাজার ৭৫৩ রান করা তামিম দুই নম্বরে। এতোদিন রেকর্ডটি তার দখলেই ছিল। জহুর আহমেদেও রান করার দিক মুশফিক সেরা। চট্টগ্রামের এই মাঠে ১৯ টেস্টের ৩৪ ইনিংসে ১ হাজার ৪০৬ রান তিনি। ১২ টেস্টের ২২ ইনিংসে ১ হাজার ২০৫ রান নিয়ে দুই নম্বরে আছেন মুমিনুল হক।
মাইলফলকের পর সেঞ্চুরি, নিশ্চয়ই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন মুশফিক। একই সঙ্গে স্বস্তির নিশ্বাসও ফেলার কথা তার। গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। প্রোটিয়াদের মাটিতে চার ইনিংসে ৫৯ রান করেন তিনি, সর্বোচ্চ ছিল ৫১ রান। বাকি তিন ইনিংসে তার রান ৭, ০ ও ১। ঘরের মাঠে এসে খারাপ সময়কে পেছনে পারলেন তিনি, রেকর্ড বইয়েও নাম তুললেন।