অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা জিতলেন জনি ডেপ; ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ পাবেন ডেপ
প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলা জিতলেন মার্কিন অভিনেতা জনি ডেপ।
বুধবার ভার্জিনিয়ার একটি আদালতের জুরি সদস্যরা জানিয়েছেন, অ্যাম্বার হার্ড তার প্রাক্তন স্বামী জনি ডেপের বিরুদ্ধে যে সহিংসতার অভিযোগ এনেছিলেন, তা মিথ্যা এবং অবমাননাকর।
অ্যাম্বার হার্ডকে প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া ডেপের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সহিংসতার অভিযোগ আনার পেছনে হার্ডের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।
তবে ডেপের বিরুদ্ধে আনা কিছু অভিযোগের রায় হার্ডের পক্ষে গেছে। জুরিরা প্রমাণ পেয়েছেন, ডেপের আইনজীবীও হার্ডের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অবমাননাকর বিবৃতি দিয়েছেন। এজন্য হার্ডকে ২ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
মামলার রায়ের পরপরই একটি বিবৃতি দিয়েছেন অ্যাম্বার হার্ড। তাতে লিখেছেন: 'আমার হৃদয় খানখান হয়ে গেছে।'
বিবৃতিতে হার্ড লিখেছেন: 'আজ আমি যে হতাশা বোধ করছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমার হৃদয় ভেঙে গেছে এটা দেখে যে, প্রমাণের পাহাড়ও আমার প্রাক্তন স্বামীর বিপুল ক্ষমতা, প্রভাব ও প্রতিপত্তির সামনে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।'
অন্যদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ডেপ লিখেছেন: 'জুরিরা আমার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন।'
এর সঙ্গে তিনি লাতিন ভাষায় যোগ করেন: 'সত্য কখনও ধ্বংস হয় না।'
মাত্র ১৫ মাস সংসার করার পর ২০১৬ সালের মে মাসে বিচ্ছেদের আবেদন করেন হলিউডের তারকা দম্পতি জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ড।
২০১৮ সালে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এ লেখা একটি উপসম্পাদকীয়তে আম্বার হার্ড অভিযোগ আনেন, জনি তাকে শারীরিক, মানসিক ও মৌখিকভাবে নির্যাতন করেছেন।
হার্ডের অভিযোগ অস্বীকার করেন ডেপ। পত্রিকায় নিজের নামে মিথ্যে অভিযোগ আনায় প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৫০ মিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ঠুকেন পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান তারকা, ৫৮ বছর বয়সী জনি ডেপ।
পরে হার্ডও উল্টো ১০০ মিলিয়ন ডলার মানহানির মামলা করেন জনির বিরুদ্ধে।
আদালতে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় জনি স্ত্রীকে মারধর করতেন। আর তা নিয়ে ব্রিটেনের একটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রথমে মানহানির মামলা করেন জনি। কিন্তু ২০২০ সালে সেই মামলায় হেরে যান তিনি।
এদিকে 'পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান' এবং 'ফ্যানটাস্টিক বিস্টস'-এর মতো বিখ্যাত সিরিজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় জনিকে। বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরই অ্যাম্বারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন জনি। মিথ্যা অভিযোগ এনে সারাজীবন ধরে গড়ে তোলা তার উত্তরাধিকার, ভাবমূর্তি এক নিমেষে অ্যাম্বার শেষ করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন জনি। সেই মামলার রায়ই এল বুধবার।
আদালতে জনির আইনজীবীরা প্রমাণ করিয়ে দিয়েছেন আসলে বরের উপরে অত্যাচার করতেন অ্যাম্বার নিজেই। সঙ্গে অডিও ক্লিপ পেশ করা হয়েছে, যাতে বলতে শোনা গেছে, 'বাইরে গিয়ে বলো জনির বউ জনিকে মারে, কে বিশ্বাস করে দেখি'! একাধিক প্রমাণ পেশ করা হয়েছিল জুরির সামনে। যেখানে অভিনেতার হয়ে কথা বলেছেন তার প্রাক্তন প্রেমিক, বিভিন্ন হোটেল-রিসর্টের কর্মীরা যেখানে জনি ও অ্যাম্বার একসঙ্গে ঘুরতে গিয়েছেন। একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে অ্যাম্বারকে স্বীকার করতেও শোনা যায় তিনি নিজে জনিকে মারধর করতেন।
প্রসঙ্গত, আদালতের রায়ের পরে প্রকাশিত বিবৃতিতে অ্যাম্বার লিখেছেন, এ রায় পারিবারিক সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য মোটেই ভালো খবর নয়। তবে বুধবার আদালত রায় দেওয়ার সময় তিনি চুপচাপ মাথা নিচু করেই বসে ছিলেন।
- সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স ও হিন্দুস্তান টাইমস