ব্যাটিং-বোলিংয়ে সাকিবদের পার্থক্য বোঝালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ
অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনে ৮০.৫ ওভারের খেলা হলো। যার পুরোটাই হয়ে উঠলো বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা। প্রথমে বল হাতে, পরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে নিজেদের সঙ্গে পার্থক্য বোঝালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ৩২.৫ ওভারে সাকিব আল হাসানের দলকে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ক্যারিবীয়রা যেভাবে ব্যাটিং করলো, তাতে ফুটে উঠলো একেকটা উইকেটের মূল্য।
প্রথম দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে পিছিয়ে। কিন্তু ম্যাচে তারা অনেক এগিয়ে। আগুনে বোলিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ১০৩ আটকে দিয়ে ক্যারিবীয়রা ৪৮ ওভারে ২ উইকেটে ৯৫ রান তুলে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ৪২ ও এনক্রুমাহ বনার ১২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
ব্রাথওয়েটের ব্যাটিংয়েই পার্থক্য পরিষ্কার। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব ইনিংস সেরা ৫১ রান করেন। তার ইনিংসটি ৬৭ বলের। ব্রাথওয়েট এখনও হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে পারেননি, কিন্তু বল খেলে ফেলেছেন ১৪৯টি। বনার ১২ রান তুলেছেন ৪৩ বলে।
অবশ্য প্রথম দিনটা হতে পারতো সমানে সমান। বাংলাদেশর ঝুলিতে উঠতে পারতো আরও কয়েকটি উইকেট। কিন্তু ক্যোচ মিসের মহড়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের পেসাররা দারুণ বোলিং করে সুযোগ তৈরি করলেও তা মাটিতে ফেলেছে দল। গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর প্রথম টেস্ট খেলতে নামা মুস্তাফিজুর রহমানের বলেই তিনবার ক্যাচ ফেলেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ইনিংস গুড়িয়ে দিয়ে অতি সাবধানী শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইকেটে টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়েই যেন মাঠে নামেন ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল। ২৫ ওভারে ৪৪ রান তোলেন তারা। বাংলাদেশের বোলাররা ভালো বোলিং করেও তাদেরকে দিকহারা করতে পারছিলেন না।
২৬তম ওভারে গিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজ। যদিও এ ক্ষেত্রে ক্যাম্পবেলকে অভাগাই বলতে হবে। মুস্তাফিজের বল ডিফেন্স করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। বল ব্যাটে লেগে লাফিয়ে গিয়ে আস্তে করে উইকেটে লাগে, পড়ে যায় একটি বেল। ক্যাস্পবেল চেষ্টা করেও বল সরাতে পারেননি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৭২ বলে ২৪ রান করে হতাশ হয়ে ফিরে যান।
৩৪ ওভারে গিয়ে দারুণ এক ডেলিভারিতে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন এবাদত হোসেন। তার করা ফুলার লেংন্থের ডেলিভারিতে ব্যাট চালান রেমন রিফার। কিন্তু আউটসাইড এজ হয়ে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ২৬ বলে ১১ রান করে ফিরে যান রিফার।
বাংলাদেশের তিন পেসার মুস্তাফিজ, এবাদত ও খালেদ এদিন দারুণ বোলিং করেছেন। তিনজনই কিপ্টে বোলিং করেছেন। মুস্তাফিজ ১২ ওভারে মাত্র ১০ রান দেন, তার ইকোনমি ০.৮৩। খালেদ ৯ ওভারে ১৫ রান খরচা করেন। এবাদত ১২ ওভারে দেন ১৮ রান। তুলনামূলক খরুচে ছিলেন সাকিব ও মিরাজ। সাকিব ২.৫০ ও মিরাজ ৪.০০ ইকোনমিতে রান দেন।
এর আগে টসে জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ উইকেটের সুবিধা কাজে লাগাতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। গতি ও বাউন্সে দুর্বার বোলিংয়ে সিদ্ধান্ত যথার্থ প্রমাণ করেন বোলাররা। অবশ্য বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দায়ই বেশি। অপ্রয়োজনীয় শট খেলেই বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান আউট হন। আলজারি জোসেফ ও জেডেন সিলস ৩টি করে উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান কেমার রোচ ও কাইল মেয়ার্স।