শামীমের শেষের ঝড়েও বড় হলো না বাংলাদেশের সংগ্রহ
টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্পিনারদের ওপর ভরসা রাখেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। পরিকল্পনা কাজেও আসে, আকিল হোসেন ও রস্টন চেস দারুণ শুরু এনে দেন। এই দুই স্পিনারের সামনে শুরুতেই দিক হারানো বাংলাদেশ ধুঁকে ধুঁকে এগোনোর পর শেষ দিকে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ব্যাটে গতি পায়। মাঝে লড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকের আলী অনিক, তবে সংগ্রহ বড় হয়নি। বুধবার সেন্ট ভিনসেন্টে আর্নেস ভেলে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ১২৯ রান তুলেছে।
উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন এনে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান তামিমের বদলে সৌম্য সরকারের সঙ্গে উইকেটে যান লিটন কুমার দাস। কিন্তু জায়গা বদলেও সফল হতে পারেননি লম্বা সময় ধরে রানখরায় থাকা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শুরু থেকেই উইন্ডিজ স্পিনার আকিলের বিপক্ষে ধুঁকতে থাকা লিটন তৃতীয় ওভারেই বিদায় নেন। আকিলের বলে এগিয়ে গিয়ে খেলার চেষ্টা করা বাংলাদেশ অধিনায়ক স্টাম্পিং হন।
কোনো ফরম্যাটেই ব্যাট কথা বলাতে না পারা লিটন ১০ বলে ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ৮ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশের বিপদ বাড়ে তিন রান পরই। দলীয় ১১ রানে তাসজিদের স্টাম্প উপড়ে নেন আরেক স্পিনার চেস। শুরু থেকেই ক্যারিবীয় স্পিনারদের বিপক্ষে রান তুলতে ভুগছিল বাংলাদেশ, এর সঙ্গে দুই উইকেটের পতনে রান তোলার গতি একেবারেই কমে আসে।
কিছু সময়ের জন্য চাপ সামলে নিলেও সৌম্য ও মেহেদী হাসান মিরাজ সেভাবে রান তুলতে পারছিলেন না। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেটে ২৯ রান তোলে বাংলাদেশ। এই রানও সম্ভব ছিল না, যদি কিনা মিরাজ রান না করতেন। আফিফ হোসেন ধ্রুবর জায়গায় সুযোগ পাওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ধাক্কা সামলানোর পাশাপাশি রান তোলাতেও মনোযোগী ছিলেন।
আগের ম্যাচে বাংলাদেশকে ভোগানো আকিল আজও দুর্দান্ত বোলিং করেন, ৭ ওভারের মধ্যে নিজের কোটা পূর্ণ করা বাঁহাতি এই স্পিনার ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে একটি উইকেট নেন। এর মাঝেও তার এক ওভারে একটি করে ছক্কা ও চার মারেন মিরাজ, এই ওভার থেকে আসে ১১ রান। তবে এমন ওভার বেশি আসেনি সৌম্য-মিরাজের জুটির পথচলায়। নবম ওভারে রান আউটে কাটা পড়েন ১৮ বলে একটি চারে ১১ রান করা সৌম্য।
পরের ওভারে আরও চাপে পড়ে বাংলাদেশ, আলজারি জোসেফকে পুল করে সীমানার কাছে ব্র্যান্ডন কিংয়ের হাতে ধরা পড়েন মিরাজ। এর আগে ২৫ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৬ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য-মিরাজের জুটি থেকে ৩১ বলে আসে ২৮ রান। ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ ১০ ওভারে ৪৫ রান তোলে। ১১তম ওভারে আরেকটি উইকেটের পতন, ৪ বলে ৫ রান করে ফিরে যান রিশাদ হোসেন।
আবারও চাপে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে পথ দেখানোর দায়িত্ব পড়ে জাকের আলী অনিক ও শেখ মেহেদির হাসানের ওপর। এই দুজনের লড়াইয়ের মাঝে দ্বিতীয় দফায় হানা দেয় বৃষ্টি। ১১.৫ ওভারের সময় খেলা বন্ধ হয়, বন্ধ থাকে ২৫ মিনিট। খেলা শুরুর পর টি-টোয়েন্টি মেজাজে রান তুলতে পারছিলেন না জাকের-শেখ মেহেদি। উল্টো ১৫তম ওভারে ভাঙে তাদের ২০ রানের জুটি।
গুডাকেশ মোটির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১১ বলে একটি চারে ১১ রান করেন শেখ মেহেদি। এরপর জাকেরও টিকতে পারেননি। ওবেদ ম্যাকয়ের করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে রভম্যানের হাতে ধরা পড়েন ২০ একটি করে চার ও ছক্কায় ২১ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এরপর শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও তানজিম হাসান সাকিবের ব্যাটে এগোয় বাংলাদেশ।
দলের সবাই রান তুলতে সংগ্রাম করলেও শেষ দিকে উইকেট গিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করেন শামীম। ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় হার না মানা ৩৫ রান করেন তিনি, যা বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ। তানজিম সাকিব ১১ বরে একটি চারে অপরাজিত ৯ রান করেন। এ দুজনের জুটি থেকে ২৩ বলে মূল্যবান ৪১ রান পায় বাংলাদেশ, এটাই সফরকারীদের ইনিংসের সেরা জুটি। ৪ ওভারে ২৫ রানে ২ উইকেট নেন মোটি। একটি করে উইকেট পান চেস, আলজারি ও ম্যাকয়।