‘আমি খুবই খুশি, বাংলাদেশের সব মানুষ খুশি’
লম্বা সময় ধরে রানখরায় লিটন কুমার দাস। কোনো ফরম্যাটেই হাসছে না তার ব্যাট। এরপরও তার মুখে হাসি লেগেই আছে। এটা অবশ্য গত চারদিনের খবর, এই সময়ের মধ্যে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টি-টোয়েন্টিতে হারিয়েছে বাংলাদেশ। অল্প পুঁজি নিয়েও দুই ম্যাচে জয়ের নায়ক বোলাররা, মাঠে লিটনের অধিনায়কত্বও প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
সব মিলিয়ে নিজের ব্যাটে রান না থাকলেও সেই আফসোস আপাতত করতে হচ্ছে না ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে। বুধবার সিরিজ জয়ের পর মুখে চওড়া হাসি নিয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া লিটন জানালেন, তিনি খুবই খুশি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে দেশের মানুষও যে খুশি, সেটাও উল্লেখ করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
অথচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশের সম্ভাবনার আগে বসেছিল বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ ড্র করলেও ওয়ানডেতে দুঃস্বপ্নের সময় যায় বাংলাদেশের। দুই ম্যাচে বড় সংগ্রহ গড়েও হারতে হয়, তিন ম্যাচের সিরিজে সফরকারীরা হয় হোয়াইটওয়াশ। এমন পারফরম্যান্সের পরে নিজেদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দারুণ কিছু করবে, এমন আশা করাটা বাড়াবাড়ি ছিল।
কিন্তু শঙ্কার কালো মেঘ উড়িয়ে দিতে সময় নেয়নি তারুণ্য নির্ভর দলটি। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৪৭ রান করা বাংলাদেশ বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সে ৭ রানের জয় পায়। দ্বিতীয় ম্যাচে সংগ্রহটা আরও ছোট, ১২৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। এই ম্যাচে বোলাররা আরও দাপুটে পারফর্ম করলেন, ২৭ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নেওয়া গেল সিরিজ জয়ের স্বাদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে তাদের বিপক্ষে সিরিজ জয়, উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার কথা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। উদযাপনে তা কিছুটা ফুটে উঠেছে, বাকিটা বোঝা গেল লিটনের কথায়। সিরিজ জয়ের আনন্দে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে তিনি বললেন, 'আমি খুবই খুশি। শুধু আমি নই, বাংলাদেশের সব মানুষই খুশি। এ রকম একটি জয়ের আশায় ছিলাম আমরা।'
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ যে ১২৯ রান তোলে, সেটা শামীম হোসেন পাটোয়ারীর শেষের ঝড়ে। অন্যরা রান তুলতে সংগ্রাম করলেও বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস। প্রথম ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন শামীম। আজকের মতোই শেষ দিকে নেমে খেলেন ১৩ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় করেন ২৭ রান।
বোলারদের কৃতিত্ব দেওয়ার পাশাপাশি শামীমের নামটিও উল্লেখ করতে ভুললেন না লিটন, 'প্রথম বলটি যখন খেলেছি, তখনই বুঝেছিলাম এই উইকেটে ব্যাট করা কঠিন। শামীমকে ধন্যবাদ, সে খুবই ভালো ব্যাটিং করেছে। বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। আক্রমণে যে-ই আসুক, উইকেট এনে দিয়েছে। সবটাই দলীয় প্রচেষ্টার ফল।'
সিরিজ নিশ্চিত হয়ে গেছে, বাংলাদেশের দৃষ্টিতে এখন ৩-০। যদিও এ নিয়ে সেভাবে বললেন না লিটন। তৃপ্ত না হয়ে ২০ ডিসেম্বর শেষ টি-টোয়েন্টিতে ভালো ক্রিকেট খেলার দিকে মনোযোগ তার, 'আমরা এখন ভালো প্রবাহে আছি। পরের ম্যাচে আবার মাঠে নেমে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের।' সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি একই ভেন্যুতে শুক্রবার সকালে শুরু হবে।