জেফ বেজোসের সঙ্গে মহাকাশ যাত্রার জন্য ২৩৮ কোটি টাকা ব্যয়!
জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন আগামী ২০ জুলাইয়ে আগত প্রতিষ্ঠানটির নতুন শেফার্ড স্পেস রকেটের বাড়তি আসন ২৮ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৩৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার কিছু বেশি। গেল শনিবারই প্রতিষ্ঠানটি এই ঘোষণা দেয়।
নিলামে অংশগ্রহণকারীরা ৪৮ লাখ ডলার থেকে দাম হাঁকাতে শুরু করেন। নিলামের শেষ তিন মিনিটেই বাড়তি আসনের মূল্য নির্ধারিত হয়।
প্রাথমিকভাবে ১৫৯ টি দেশ থেকে ৭৬০০ জন মানুষ এই নিলামে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেন। তবে আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও তার ভাই মার্কের সঙ্গে মহাকাশ ভ্রমণে সঙ্গী হতে যাওয়া সেই বিজয়ী ব্যক্তির পরিচয় এখনো অজ্ঞাতই থেকে গেছে।
১১ মিনিটের এই স্বয়ংক্রিয় ফ্লাইটটি হতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানের ১৬তম ফ্লাইট, কিন্তু এবারই প্রথমবারের মতো তারা মানুষকে বহন করবে। ক্যাপসুলটি ছয় জন পর্যন্ত যাত্রী বহন করতে পারে, যদিও প্রতিষ্ঠানটি এখনো বাকি যাত্রীদের নাম প্রকাশ করেনি।
ফ্লাইটের ১৫ দিন আগেই আমাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে সরে আসবেন জেফ বেজোস। বেজোস নিজের ইনস্টাগ্রামে এবিষয়ে লিখেছেন, 'পাঁচ বছর বয়স থেকেই আমি মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। অবশেষে আগামী ২০ জুলাই আমি আমার ভাইয়ের সাথে সেই স্বপ্ন পূরনের যাত্রাটা শুরু করবো। এটি হবে প্রিয় বন্ধুর সাথে এক শ্রেষ্ঠ অ্যাডভেঞ্চার।'
বিশ্বের শীর্ষ কিছু ধনী ব্যক্তির মধ্যে চলমান প্রতিযোগিতার মধ্যেই এই ভ্রমণের খবর এসেছে। ব্লু অরিজিন এই মুহূর্তে মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এলন মাস্কের স্পেস এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজি ও রিচার্ড ব্র্যানসনের আওতাধীন ভার্জিন গ্যালাক্টিক হোল্ডিংস ইনকর্পোরেশনকে টেক্কা দিতে চাইছে। ব্র্যানসনের ভার্জিন ক্রাফটও খুব শীঘ্রই নিউ মেক্সিকোর ট্রুথ অর কনসিকোয়েন্স শহরের কাছে অবস্থিত মহাকাশ সেন্টার থেকে যাত্রীবাহী মহাকাশযান চালু করতে যাচ্ছে।
বেজোস প্রতি বছর আমাজনের আয় থেকে ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছেন তার ব্লু অরিজিন কোম্পানিকে পাকাপোক্ত করতে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, মহাকাশে যেতে ইচ্ছুক যাত্রীদের উচ্চতা অবশ্যই ৫ থেকে ৬ ফুট ৪ ইঞ্চির মধ্যে হতে হবে। ওজন থাকতে হবে ১১০ থেকে ২২৩ পাউন্ডের মধ্যে। ৯০ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে উৎক্ষেপণ টাওয়ারের সিঁড়ির সাতটি ধাপের ফ্লাইট পাড়ি দেয়ার মত যোগ্যতা থাকতে হবে এবং মহাকাশযানের ভেতর টয়লেটে যাওয়ার বিরতি ছাড়াই ৯০ মিনিট বাঁধা অবস্থায় থাকতে হবে।
এছাড়াও তাদেরকে মহাকর্ষীয় শক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে, যা অবতরণের সময়ে ব্যক্তির স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে সাড়ে পাঁচ গুণ এবং আরোহণের দুই মিনিট সময়ে তিন গুণ বেশি হবে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, নিলামের অর্থ ব্লু অরিজিন ফাউন্ডেশন 'ক্লাব ফর দ্য ফিউচার' এ দান করা হবে। এই ফাউন্ডেশন আগামী প্রজন্মকে স্টেম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিত) নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে ও ভবিষ্যতে মহাকাশে বসতি গড়ার সম্ভাবনা তৈরিতে অনুপ্রাণিত করতে কাজ করছে।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান