সমুদ্রগর্ভে বিলীন মিশরের প্রাচীন শহর হেরাক্লিয়নে সমাধিক্ষেত্র ও যুদ্ধজাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার
সমুদ্রের নিচে হারিয়ে যাওয়া মিশরের প্রাচীন শহর থনিস হেরাক্লিয়ন থেকে নতুন প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পেয়েছেন ডুবুরিরা। সাম্প্রতিক এক অভিযানে পানির নিচে শহরের দুটি ভিন্ন অংশ থেকে যুদ্ধ জাহাজ ও সমাধি ক্ষেত্রের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করা হয়েছে। সমাধি ক্ষেত্রটি গ্রিক বণিকদের ছিল বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৯ জুলাই) মিশরের পর্যটক ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয় এই তথ্য প্রকাশ করে।
ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত হেরাক্লিয়ন এক সময় মিশরের বৃহত্তম বন্দর নগরী ছিল। নীল নদীর পশ্চিম শাখার মুখে মিশরের প্রবেশ পথ নিয়ন্ত্রণ করত প্রাচীন এই শহর।
খ্রিস্টপূর্ব ৩৩১ অব্দে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট নিকটবর্তী আলেকজান্দ্রিয়া প্রতিষ্ঠার আগে কয়েক শতাব্দী ধরে অঞ্চলটিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে হেরাক্লিয়ন।
একাধিক ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে শহরের নীলনদের বদ্বীপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস হয়ে সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়।
২০০১ সালে মিশরের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর আলেকজান্দ্রিয়ার কাছে আবু কীর উপকূলীয় অঞ্চলে পুনরায় আবিষ্কৃত হয় থনিস হেরাক্লিয়ন।
মিশর ও ফ্রান্সের পরিচালিত যৌথ এক অভিযানে সমর জাহাজটি আবিষ্কৃত হয়। অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দেয় ইউরোপীয়ান ইনস্টিটিউট ফর আন্ডারওয়াটার আর্কিওলজি (আইইএএসএম)।
খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে হেরিক্লিয়নের আমনের বিখ্যাত মন্দিরটি ধসে পড়ার সময় জাহাজটি পাশেই নোঙর ফেলা অবস্থায় ছিল। ফলে, জাহাজটিও ডুবে যায়।
মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, প্রাথমিক গবেষণা অনুসারে জাহাজটির নির্মাণে প্রাচীন মিশরীয় ছাপ রয়েছে। প্রথাগতভাবে নির্মিত জাহাজটিতে বিশাল পালসহ, বৈঠা ও ২৫ মিটার সমতল পাটাতনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
শহরের অপর একটি অংশে অভিযান চালিয়ে বিশাল গ্রিক সমাধি ক্ষেত্রের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়। সমাধিক্ষেত্রটি খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের শুরুর দিককার বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
"এই আবিষ্কার শহরটিতে বসবাসকারী গ্রিক বণিকদের অবস্থান চমৎকারভাবে উপস্থাপন করে," জানায় কর্তৃপক্ষ।
শেষের দিককার ফারাও রাজত্বের সময় গ্রিকদের সেখানে বসতি স্থাপনের অনুমতি থাকার বিষয়টিরও উল্লেখ করেন তারা।
"আমুনের বিশাল মন্দিরের কাছেই তারা নিজেদের উপাসনার স্থান নির্মাণ করেছিল। সেগুলোও একই সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যায়। মিশরীয় মন্দিরের সাথেই মিলিতভাবে তাদের অবশিষ্টাংশের সন্ধান পাওয়া যায়।"
সূত্র: রয়টার্স