নন-কটন গার্মেন্টস পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে ফাইবারে শুল্কছাড়ের দাবি
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নন-কটন গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদন বাড়াতে চায় দেশের তৈরি পোশাক মালিকেরা। এজন্য দেশের স্পিনিং ও টেক্সটাইল মিলে ব্যবহৃত সব ধরনের ফাইবারের ওপর আগামী বাজেট থেকে শুল্কছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
একই সঙ্গে আগামী বাজেট থেকে টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক উৎপাদনের কারখানায় ব্যবহৃত স্পেয়ার পার্টস আমদানিতে ক্যাপিটাল মেশিনারির মতো ১ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের দাবি করেছেন তারা ।
তৈরি পোশাকের কাঁচামাল হিসাবে বর্তমানে কটন আমদানিতে শূণ্য শুল্ক এবং নন-কটন ফাইবার আমদানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক দিতে হলেও স্পেয়ার পার্টস আমদানিতে ২৬ থেকে সর্বোচ্চ ১০৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপ করা রয়েছে।
করোনাকালীন সংকট মোকাবিলা ও প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে বিশেষ বিবেচনায় উভয় ক্ষেত্রে এ ছাড়ের দাবি জানিয়ে সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে টেক্সটাইল ও পোশাক খাতের তিন সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) , বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বিশ্বব্যাপী গার্মেন্টসের ৭৪ শতাংশই নন-কটন বেইজড। কিন্তু আমরা ঠিক তার উল্টো। আমাদের ৭০ শতাংশই কটন বেইজড। এর ফলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। এ ব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তন দরকার'।
তিনি বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকার কারণে কটনই আমদানি করছেন উদ্যেক্তারা। ফলে তারা পিছিয়ে পড়ছেন। দেশের গার্মেন্টস শিল্পকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে নন-কটন গার্মেন্টসের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া দরকার। ফাইবার সহজলভ্য হলে এ শিল্প সংকট মোকাবিলা করতে পারবে।
তিন সংগঠন থেকে দেয়া চিঠিতে জানানো হয়, কটন আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকায় দেশের গার্মেন্টস শিল্প এতদূর এগিয়েছে। নন-কটন সুতা আমদানিতে ১৫ শতাংশের মতো আমদানি শুল্কারোপ করা রয়েছে। বৈশ্বিক চাহিদা বিবেচনায় নন-কটন সুতার উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরিতে ঝুঁকছেন উদ্যোক্তারা।
সংগঠনগুলো বলছে, দেশের বস্ত্র খাতের স্পিনিং মিলগুলো কাঁচামাল হিসেবে তুলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের নন-কটন সুতা ব্যবহার করে থাকে। আগামীতে এর ব্যবহার আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সব ধরনের ফাইবারের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের ফাইবারের সুতার ওপর সমহারে কর আরোপ হওয়া যৌক্তিক।
অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রাথমিক বস্ত্র খাতে স্পিনিং, উইভিং, ডায়িং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং মিল এবং পোশাক খাতে অত্যাধুনিক কম্পিউটারাইজড মেশিনারিজ ব্যবহার হচ্ছে। মূলত, যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়, যন্ত্রাংশও সেখান থেকেই আমদানি করা হয়। বর্তমানে যন্ত্রাংশভেদে সর্বনিম্ন ২৬ দশমিক ২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপ রয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সব ধরনের সুতার ওপর ভ্যাট কমিয়ে প্রতি কেজিতে তিন টাকা হার নির্ধারণে অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চেয়েছেন উদ্যোক্তারা।