ব্যাংকের সিএসআর খাতের অর্ধেক রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ব্যয়ের নির্দেশ
রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোকে করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতের ৫০ শতাংশ অর্থ ওই অঞ্চলে ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আগের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত ১১৬ কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। নতুন নির্দেশনার ফলে এর অর্ধেক অর্থ অর্থাৎ ৫৮ কোটি টাকা রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ব্যয় করতে হবে।
তবে কোন কোন ব্যাংক ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় করে থাকলে অর্থের পরিমাণ কম বেশি হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
গেল ২৬ এপ্রিলের নির্দেশনায়, ৫০ শতাংশ অর্থ সিটি করপোরেশন এলাকা এবং বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যয় করার নির্দেশনা ছিল।
তবে নতুন নির্দেশনায় ৫০ শতাংশ অর্থ রাজশাহী ও খুলনায় ব্যয় করতে হবে। সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশন এন্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি) এই নির্দেশনা সংক্রান্ত সার্কুলার ইস্যু করেছে।
এতে বলা হয়, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে করোনার ভারতীয় ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। এই সংক্রমণ দরিদ্রদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া অনেক ব্যাংক ওই অঞ্চলে আরো বেশি সহায়তা করার আগ্রহ দেখাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নতুন নির্দেশনায় ব্যাংকগুলো নিজেও বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারবে। আগে জেলা প্রশাসক কিংবা এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়নের নির্দেশনা ছিল।
গেল ২৬ এপ্রিল এক নির্দেশনায় ব্যাংকগুলোকে কোভিড মোকাবেলায় চলতি বছরের জুনের মধ্যে বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
ওই নির্দেশনায় ২০২০ সালের নিট মুনাফার ১ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ বিশেষ সিএসআর হিসেবে অতিরিক্ত ব্যয় করার কথা বলা হয়েছিল। সেই হিসেবে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১১৬ কোটি টাকা। বরাদ্দকৃত অর্থ ৩০ জুনের মধ্যে ব্যয় করার নির্দেশনা ছিল। নতুন নির্দেশনায় সময় বাড়িয়ে ১৬ আগস্ট করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে কতগুলো ব্যাংক কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে ফেলেছে তার কোন হিসাব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এখনো আসেনি উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, যেসব ব্যাংক ৫০ শতাংশের বেশি অর্থ খরচ করে ফেলেছে তাদেরকে বাকি অর্থ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে খরচ করতে হবে।
বিশেষ সিএসআর এর অর্থ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা এবং কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য ব্যয় করার নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, সিএসআর বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে আগামী ৩১ আগস্ট তারিখের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট বরাবর দাখিল করতে হবে। ২৬ এপ্রিলে নির্দেশনায় সময়সীমা ছিল ৩০ জুলাই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গেল বছর ব্যাংকগুলো তাদের সিএসআর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৯৬৮ কোটি টাকা খরচ করেছে। বেশিরভাগ টাকা ব্যয় হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য খাতে।